জুলাই ২৪, ২০২২, ০৫:৩২ এএম
নিট পোশাক ও কাপড়ে রঙ করার জন্য যে পরিমান বিদ্যুৎ ও গ্যাসের চাপ প্রয়োজন, তা পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। ঈদুল আজহার আগে থেকে গ্যাসের সংকটে ভুগছে রপ্তানিমুখী বস্ত্র কারখানাগুলো। এর সাথে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
উৎপাদন কমেছে অর্ধেক
চলতি মাসের শুরুতে গ্যাস-সংকটে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গাজীপুরের বস্ত্রকলগুলোর উৎপাদন ২০-৬০ শতাংশ কমে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ঈদের পর সব কারখানা এখনো পুরো মাত্রায় উৎপাদনে যায়নি। আগামী সপ্তাহে প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, শিল্পে গ্যাস দেওয়ার ক্ষেত্রে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তা না হলে রপ্তানি ব্যাহত হবে।
দুই বছর আগেও নিটের চেয়ে ওভেন পোশাক রপ্তানি বেশি হতো। বিদায়ী অর্থবছর ওভেনের চেয়ে ৩৮২ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানি বেশি হয়েছে। ওভেন পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়ের বড় অংশ আমদানি করতে হয়। আর নিট পোশাকের ৯৫ শতাংশ কাপড় দেশেই হয়। সেই কাপড় উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে গ্যাসের প্রয়োজন হয়।
নারায়ণগঞ্জের নিট কারখানাগুলোতে দিনের বেলা গ্যাসের চাপ ২-৩ পিএসআইয়ের বেশি থাকছে না। সে কারণে কাপড় রং করা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এতে সরবরাহব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ক্রয়াদেশ কমার পাশাপাশি আমাদের নতুন দুশ্চিন্তা গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন কোনো ধরনের অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত না পায়, সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তার জন্য শিল্পকারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং কাঁচামাল আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
পোশাকের ক্রয়াদেশেও ভাটার টান
বর্তমানে কারখানাগুলোতে শীতের পোশাক তৈরি হচ্ছে। একই সাথে আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ আসার সময়ও এখন। গত বছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর ক্রয়াদেশ এসেছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ কম আসছে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তার নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।