বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজকক্ষে গিয়ে স্মৃতিকাতর তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১৯, ২০২২, ০২:০৯ এএম

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজকক্ষে গিয়ে স্মৃতিকাতর তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) ৫৭তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পাসের জারুলতলায় আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। 

নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মৃতিচারণ করে আবেগময় সময় কাটান তথ্যমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে তথ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সোহরাওয়ার্দী হলের যে কক্ষটিতে থাকতেন সেখানে যান। সেই সময় নিজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা ভেবে কতটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন তিনি সেটি তাঁর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া পোস্টটি থেকে বুঝা যায়।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান শেষে তিনি একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজকক্ষে কাটানো সময় নিয়ে লিখেছেন।

শিক্ষাজীবনে হলের যে কক্ষটিতে ছিলেন সেই কক্ষের বর্তমান সদস্যদের সাথে তোলা কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে তথ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আজকের দিনটা আমার জন্য অসাধারণ ছিল। আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। সে আয়োজনে অংশ নিতে সেখানে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান শেষে সোহরাওয়ার্দী হলের ১৫৭ নাম্বার কক্ষে যাই যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি থাকতাম। আমি সে সময় যে বিছানায় ঘুমাতাম সেই বিছানায় বসেছি। কক্ষে বর্তমানে যারা থাকে তারা আমার পাশেই বসা। তাঁরা হলেন, শাহরিয়ার সোহাগ (লোক প্রশাসন), জুনায়েদ হোসেন (ইতিহাস), সুশান্ত (সমাজবিজ্ঞান)। সেই কক্ষে গিয়ে আমি সত্যিই অনেক আবেগাপ্লুত হয়েছিলাম। বর্তমানে যারা কক্ষটিতে থাকেন তাঁদের ধন্যবাদ, এমন আন্তরিকভাবে গ্রহণ করার জন্য।’

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপ্তি এবং সুনাম নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। শুধু পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদানই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞানের চর্চা করা এবং সেই জ্ঞানের চর্চার সাথে বিশ্বাঙ্গনের যোগসূত্র ঘটানো। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিতে হলে যা করা প্রয়োজন তার মধ্যে একটি হলো- বাৎসরিক ক্যালেন্ডার করে এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার- সিম্পোজিয়াম আয়োজন। আরেকটি হলো, একটি মানসম্মত জার্নালের নিয়মিত প্রকাশ  এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের গবেষণালব্ধ নিবন্ধ সেখানে ছাপা এবং তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া, তাহলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব এবং মর্যাদা বাড়াবে। বিশাঙ্গনের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযোগ হবে। আর অবকাঠামোগত উন্নয়নই সব নয়, উন্নত পাঠদান, বহুমাত্রিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক চর্চার উন্নয়নের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন নির্ভর করে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতির চর্চা আরও বাড়ানো প্রয়োজন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি এখানে আসার সময় একটি ছোট্ট মানববন্ধন দেখেছি- চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে এখানে ফিরিয়ে আনার জন্য। চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে একেবারে এই ক্যাম্পাস থেকে সবকিছু গুটিয়ে শহরে পাঠিয়ে দেয়া একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমি উপাচার্যের সাথে আলাপ করেছি অন্তত মাস্টার্স ডিপার্টমেন্টটা আপাতত ক্যাম্পাসে আসতে পারে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক  ড. মুনতাসীর মামুন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, চবি এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক ও চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ ও নাজিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি ও প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া স্বাগত বক্তার বক্তব্য রাখেন।

Link copied!