কক্সবাজারে বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত

জাতীয় ডেস্ক

এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ১০:৪৮ এএম

কক্সবাজারে বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত

ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারে বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে থাকা ৫ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১০-১২ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁওয়ের খোদাইবাড়ি এজি লুৎফুর কবির আদর্শ দাখিল মাদরাসা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- বাহারছড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইলশা পুরাতন বাড়ি গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে আবু আহমেদ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্বিম ইলশা গ্রামের  মাহবুবুল আলমের স্ত্রী মাহমুদা বেগম, ডোংরা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী সায়রা খাতুন, খানখানাবাদ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুফিয়া ডোংরা গ্রামের গোলাম সোবহানের ছেলে দুলা মিয়া এবং সবশেষ খবর অনুযায়ী নিহত একজনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। মালুমঘাট হাইওয়ে থানাতে আছে শনাক্ত না হওয়া মরদেহ।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার বায়তুশ শরিফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে মাইক্রোবাসে করে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজারগামী শ্যামলী পরিবহন নামে একটি বাসের সঙ্গে এই সংঘর্ষ হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে দুজন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

হতাহতরা সবাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বসবাস করেন। তারা গত আটদিন থেকে বায়তুশ শরিফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বাঁশখালীর বেশ কিছু অসুস্থ রোগী চোখের সমস্যা নিয়ে গত আটদিন আগে শহরের বায়তুশ শরিফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসা শেষে  সোমবার তিনটি মাইক্রোবাসে গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী ফিরছিলেন। দুটি মাইক্রো চলে গেলেও একটা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ১৪ যাত্রীর মধ্যে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যায়। সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়। বাকিরা সবাই চিকিৎসাধীন। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে আরও দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

চকরিয়া মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বরত ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও খোদাইবাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তারা লাশ উদ্ধার ও দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো জব্দ করে মালুমঘাট হাইওয়ে থানায় নিয়ে এসেছেন। গাড়িটি পুলিশের হেফাজতে থাকলেও চালক পালিয়ে গেছেন।”

ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, “বেলা ১২ টার দিকে শ্যমলী পরিবহনের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুজনের মৃত্যু হয়।”

কক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সহায়ক কর্মকর্তা নেছার আহমদ বলেন, “বাঁশখালীর ২৬ রোগী চোখের চিকিৎসা শেষে সোমবার বেলা ১২টার দিকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। মাঝপথে ঈদগাঁ উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের চিকিৎসার খবরাখবর নিতে বায়তুশ শরফ হাসপাতালের লোকজন সদর হাসপাতালে গেছেন।”

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, “ঈদগাঁওতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কয়েকজন নারী-পুরুষকে দুপুর একটার পর হতে পৃথক সময়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। এদের মাঝে এক নারী ও এক পুরুষ চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মারা গেছেন। হাসপাতালে আনার আগে আরও একজনের মৃত্যু হয়।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী ( ট্রাফিক) বলেন, “মাইক্রোবাসে ১৪ জন যাত্রী ছিল। চট্টগ্রামগামী শ্যমলী পরিবহন নামে একটি বাস মাইক্রোবাসটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।”

বাঁশখালী সমিতি কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আলী বলেন, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। নিহতদের মরদেহ গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এতে যাদের চোখে ছানি পড়েছে তাদের পৃথকভাবে ছানি অপারেশন এবং চিকিৎসার জন্য বাঁশখালী থেকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শুক্রবার। তাদের চিকিৎসা শেষে সোমবার ফিরে আসার পথে এই দুঘর্টনা ঘটে।

Link copied!