ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কুশিয়ারা: সিলেটের ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২১, ২০২২, ০২:২৪ পিএম

ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কুশিয়ারা: সিলেটের ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে স্মরণকালের রেকর্ড বৃষ্টিতে ঢল নেমে প্লাবিত হয়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ। সেই সঙ্গে সিলেটে ভারী বর্ষণ আর সর্বগ্রাসি বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ কারণে সিলেটের সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। গত দু’দিন ধরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এবার ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে কুশিয়ারা নদী।

ভারতের আসাম, শিলচর, মনিপুরে পাহাড়ি এলাকায় ভারী বর্ষণে বেড়েই চলছে কুশিয়ারা ও সোনাই নদীর পানি। কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও ডাইক উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। উপজেলাগুলোতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কুশিয়ারার পানিতে সরাসরি সয়লাব হচ্ছে জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর।
 
সোমবার পর্যন্ত জেলার ছয়টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এর মধ্যে সিলেটের জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর। জানা গেছে, গত রবিবার থেকে কুশিয়ারা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ইতোপূর্বে যেসব এলাকা আংশিক বন্যা কবলিত ছিল, সেগুলো এখন দুর্গত এলাকায় পরিণত হচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম-সব জায়গাতেই উঠছে পানি।

আর সোনাই নদীর পানি প্রবেশ করছে হাকালুকি হাওরে। এছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভারত থেকে আসা আরও ৪টি পাহাড়ি নদী ফানাই-আনফানাই, কন্টিনালা, জুড়ি দিয়ে উজানের ঢল নামছে উপ মহাদেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে। ফলে হাওরের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেক উঁচু বসতিতেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এরই মধ্যে হাটবাজার, রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হাকালুকি হাওরের তীরবর্তী সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ঘিলাছড়া জিরো পয়েন্ট পর্যটন কেন্দ্রও পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৮৮ সালের বন্যার পর এটাই সর্বোচ্চ বন্যা। এমন ভয়াবহ বন্যা কেউ দেখেননি বলেও জানান স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে- সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলার ৩৯টি স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল। বর্তমানে উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বানের পানিতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরসহ ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর হাকালুকি হাওরের চার পাশের অন্তত শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
 
এদিকে, সুরমা তীরবর্তী সিলেট নগর, সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট কোম্পানীগঞ্জ এলাকার বন্যা পরিস্থিতি খানিকটা উন্নতির দিকে রয়েছে। এখনো ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত রয়েছে এবং পানিবন্দি রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

Link copied!