মাছ কেটে দিয়ে দৈনিক আয় ১ হাজার টাকা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৫, ২০২২, ০৬:১২ পিএম

মাছ কেটে দিয়ে দৈনিক আয় ১ হাজার টাকা

সিলেটের কাজীর বাজার মাছের আড়ত। সিলেটের পরিচিত মাছবাজার এটি। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাছ কেনাবেচা করা ব্যক্তিদের যাতায়াতে ব্যস্ত থাকে বাজারটি। আজ রোববার সকাল আটটার দিকে বড় একটি রুই মাছ কাটছিলেন সাদিকুর রহমান (৩০)। পাশে দাঁড়িয়ে কাটা মাছগুলো কত বড় হবে, সেটি দেখিয়ে দিচ্ছিলেন রাজিউল ইসলাম (৩৮)। জানা গেল, বাজার থেকে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের একটি রুই মাছ কিনেছেন রাজিউল। সেটির দাম পড়েছে ৪০০ টাকা। মাছ কেনার পর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কাটাকাটি ঝামেলা, এ জন্য বাজারেই কাটার ব্যবস্থা করেছেন। সাদিকুরের সঙ্গে ৩০ টাকার চুক্তিতে মাছটি কাটাচ্ছিলেন তিনি। কাজীর বাজারে সাদিকুর ছাড়াও আরও প্রায় ১৫ জন দৈনিক মাছ কাটার কাজ করেন। এটিই তাঁদের পেশা। মাছ কাটার আয় দিয়ে চলে তাঁদের সংসার। সিলেটে তাঁদের ‘মাছ খুটানি’ বলা হয়ে থাকে।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, বাজারে মাছ কাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাছ খুটানিরা। একজন মাছ কাটলে পাশে থাকে আরও তিন থেকে চারজন। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও কিশোর বয়সী। মাছ কাটার জন্য নিয়ে আসার পর তারাই প্রথমে মাছের আঁশ ছাড়িয়ে দেয়। পরে মাছ খুটানি দা দিয়ে মাছ কাটেন।

মাছ কাটায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজীর বাজারের আড়তে তাঁরা ভাড়া দিয়ে বসেন। দৈনিক হিসাবে সেটি ২৫০ টাকা। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত থাকেন তাঁরা। বাজারে বর্তমানে মাছ কাটার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে বড় মাছ প্রতি কেজি ১০ টাকা এবং ছোট মাছ কাটতে হলে প্রতি কেজিতে দিতে হবে ৪০ টাকা। তবে ক্রেতা ও মাছের পরিমাণের ওপর এই দাম ওঠানামা করে। ছোট মাছ কাটতে সময়ের প্রয়োজন হয়, সে জন্য পারিশ্রমিকও বেশি রাখেন তাঁরা। মাছ কাটায় ব্যস্ত থাকা সাদিকুর রহমান বলেন, তিনি নগরের শেখঘাট এলাকার বাসিন্দা। ঘরে ছয়জন সদস্য তাঁরা। মাছ কেটে যা আয় করেন, তা দিয়েই চলে সংসার। পড়ালেখা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর আর এগোতে পারেননি। পরে বাজারে এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে এ কাজে নামেন। মাছ কেটে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা আয় হয়। এর থেকে ভাড়া বাবদ প্রতিদিন ২৫০ টাকা দিতে হয়। এর বাইরে মাছ পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করার জন্য পানি কিনতে হয়। তিনি বলেন, বাজারে মাছ কাটা ছাড়াও অনেক সময় বাসাবাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে ডাক পড়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাছ বাজারেও কেটে দেওয়া হয়।

সাদিকুরের আরেক পাশে মাছ কাটছিলেন সালাম মিয়া (১৮)। তিনি বলেন, ‘বেশি দিন হয়নি এ কাজ শুরু করেছি। আগে বাজারে আসতাম। মাঝেমধ্যে মাছ কাটতাম। আস্তে আস্তে দক্ষ হতে হয়েছে। একটু অসাবধান হলে হাত কাটার ভয় আছে। তবে এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রথম দিকে হাত কেটে কিছু সমস্যা হলেও এখন সমস্যা হয় না।’

 
 
Link copied!