যমুনা নদীকে ছোট করার সরকারি প্রকল্প আত্মঘাতী হবে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ১৪, ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম

যমুনা নদীকে ছোট করার সরকারি প্রকল্প আত্মঘাতী হবে: ফখরুল

সারাবিশ্বে যেখানে প্রবাহমান নদী খনন ও প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেখানে আমাদের দেশে নেওয়া হচ্ছে নদীর প্রশস্ততা কমানোর প্রকল্প। খোদ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া ১১শ কোটি টাকার সেই প্রকল্পে যমুনা নদীকে ছোট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টিকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, হাজার বছর ধরে বহমান একটি নদীকে ছোট করার যে প্রকল্প, সেটি মারাত্মক আত্মঘাতী। এর ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সভার সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ১১ মার্চ বিএনপি ঘোষিত দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় কয়েকটি জেলায় আকস্মিক ন্যক্কারজনক হামলা চালায়, মৌলভীবাজারে মানববন্ধন কর্মসূচির শুরুতেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের মদদে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপরে সশস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নেতা নাছের রহমানসহ প্রায় ২৫ জন গুরুতর আহত হন। সভায় এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলতি অর্থবছরের ছয় মাস রেন্টাল ও আইপিপি কেন্দ্রগুলোতে ৭০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জের পেছনে প্রায় ২১৬ কোটি ডলার দিতে হবে। সভায় বারবার সতর্ক করার পরও দুর্নীতিপরায়ণ সরকার নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে চরম ক্ষতিকর এসব চুক্তি বাতিল না করে অতিরিক্ত ব্যয় করেই চলেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ছাড়া ভারতের সাথে উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী হওয়ার পরও জনমতকে উপেক্ষা করে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী এবং জনমতের ওপর চপেটাঘাত, যা কোনোমতেই জনগণ মেনে নেবে না। 

তিনি আরও বলেন, পবিত্র রমজান শুরুর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগের বছরগুলোর মতো এবারও এতিম ও আলেম-ওলামা, পেশাজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ফখরুল বলেন, এই অনির্বাচিত, দুর্নীতিপরায়ণ ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতির খতিয়ান জনসমক্ষে উন্মোচন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত সভায় গ্রহণ করা হয়েছে।

Link copied!