‘খালেদার চিকিৎসা সিংগাপুর-ব্যাংককেও নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০১:১৫ এএম

‘খালেদার চিকিৎসা সিংগাপুর-ব্যাংককেও নেই’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস আক্রান্ত। তার চিকিৎসায় তাকে বিশেষ এক ধরনের স্টেন্টিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা বলছেন, বিশেষ এই চিকিৎসা বাংলাদেশ বা উপমহাদেশ তো বটেই, থাইল্যান্ড-সিংগাপুরের হাসপাতালগুলোতেও নেই। বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি অ্যাডভান্সড হেলথ সেন্টারে বিশেষ কয়েকজন দক্ষ চিকিৎসকই কেবল এই চিকিৎসা দিতে সক্ষম।

চিকিৎসকদের বক্তব্য সরাসরি দেখুন

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা আরও বলছেন, বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ দক্ষ চিকিৎসকদের সহায়তায় সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে খালেদা জিয়াকে তারা বর্তমানে ‘স্থিতিশীল’ (স্ট্যাবল) রাখতে পেরেছেন। তবে তার চূড়ান্ত চিকিৎসার জন্য যেটি করা প্রয়োজন, সে প্রসঙ্গে তারা অনেকটাই ‘অসহায়’ (হেল্পলেস) বোধ করছেন।

রবিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে এক ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ডা. এফ এম সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘প্রকৃত’ তথ্য তুলে ধরতে এই ব্রিফিং আয়োজন করা হয় বলে জানান তিনি।

বিদেশী চিকিৎসক আনার সুযোগ নেই

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশী চিকিৎসক আনার কোন সুযোগ নেই বলে জানায় চিকিৎসক দল। তারা বলেন, যুক্তরাজ্যের কিংস মেডিকেল কলেজে  এই ধরনের রোগী হেলিকপ্টার দিয়ে নিয়ে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। কেনান পুরো মেডিকেল সেট আপের প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে রোগী যায় কোন রোগীর কাছে হাসপাতাল আসেনা। আর বর্তমানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ম্যানুয়ালি চিকিৎসা ও রক্ত অপসারন করতে হবে। যে প্রযুক্তি ও দক্ষতা এই উপমহাদেশের কারও নেই।

বর্তমানে সুস্থ হলেও আশঙ্কা বেশি

গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে অসুস্থ থাকার পর রবিবার ২৮ সেপ্টেম্বর একটু সুস্থ রয়েছে খালেদা জিয়া। কিন্তু তার ব্লিডিং হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ৭০ শতাংশ রয়েছে বলে জানায় চিকিৎসক দল। ইতোমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপও করা হয়েছে। তারা দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

নিজেই ভয়াবহতা দেখছে

চিকিৎসক দল আরও জানায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নিজেই তার রক্তক্ষরণসহ অন্যান্য ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করছেন। যার ফলে মানসিক ধাক্কাও রয়েছে। কত কয়েকদিন অবস্থা খারাপ দেখায় পুরো দলের মন খারাপ দেখে সে তার অবস্থার কথা জিজ্ঞাসও করেছিলেন। তবে তিনি আজ (রবিবার) সুস্থ হলেও দুই পা ফেলার মত সুস্থ হয়ে ওঠেনি।

চাকা চাকা রক্ত বের হচ্ছে

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পেট থেকে চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে উল্লেখ করে  ডা. এফ এম সিদ্দিকী জানান, হাসপাতালে একবার রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেছে। কিন্তু এই ধরনের রোগীকে বারবার রক্ত দেয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আশঙ্কা করছি, আবার যদি ব্লিডিং হয় তাহলে যদি এটাকে কন্ট্রোল করা সাপোর্ট করা যাবে না। ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।

ইন্টারভ্যানশনাল গ্যাস্ট্রো অ্যানালিস্ট চিকিৎসক আরেফিন সিদ্দিক লিভারে রক্তক্ষরণ ঠেকাতে চিকিৎসা পদ্ধতি তুলে ধরে বলেন, এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। এটাকে টিপস বলে। বাংলাদেশে টিপস করা কোনো রোগী আমরা দেখি না যার দুই থেকে তিনবার এটা করা হয়েছে।

Link copied!