ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০১:৩১ পিএম
এ যেন বনের রাজা টারজান কিংবা জঙ্গল বুকের মুগলীর গল্প। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রাণীর সাহচর্যে বেড়ে ওঠার গল্প। বাস্তবেই ঘটেছে এমন ঘটনা। গল্পের পাতায় বিষয়টি যতটা রোমাঞ্চকর বা দারুণ, বাস্তবে তা হৃদয় বিদারক। ইউক্রেনে ওক্সানা মালায়া নামে এক নারীর সঙ্গে এমনটাই ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওক্সানা মালায়াকে মাত্র ৩ বছর বয়সে তার মদ্যপ বাবা-মা ঠান্ডার মধ্যে বাইরে রেখে যান। পরে আশ্রয়ের জন্য তিনি তার পোষা কুকুরটিকে অনুসরণ করে একটি গর্তে যান এবং প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেখানে কুকুরের দলের সাথে থাকেন।
এই সময় ওক্সানা মালায়া ঘেউ ঘেউ করা, গর্জন করা এবং হাত-পা ব্যবহার করে হাঁটার কৌশল রপ্ত করেন।
মালায়া বলেন, ‘আমার অনেক ভাইবোন ছিল এবং আমাদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত বিছানা ছিল না। তাই আমি কুকুরের কাছে গিয়েছিলাম এবং তার সাথে থাকতে শুরু করি। বেঁচে থাকতে, আমি সেখানে নিজের থাকার জন্য একটি বাড়ি তৈরি করেছিলাম এবং জীবনের পরবর্তী পাঁচ বছর সেখানে থেকেছিলাম।’
এই ইউক্রেনীয় নারী বলেন, ‘যখন আমাকে উদ্ধার করা হয় তখন কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমি তাদের (কুকুর) সাথে কথা বলতে চাই, ঘেউ ঘেউ করতে চাই। এটাই ছিল আমাদের যোগাযোগের উপায়। কুকুরদের মত করে কাঁচা মাংস খেতাম, খাবারের জন্য আবর্জনার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতাম।’
৯ বছর বয়সে যখন তাকে পুলিশ উদ্ধার করতে চায়, কুকুরদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাদের বাধা দেয়। পরে খাবার দিয়ে কুকুরগুলোকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে মালায়াকে উদ্ধার করেন কর্মকর্তারা।
শিশু মনোবিজ্ঞানী লিন ফ্রাই বলেন, মালায়া হয়তো কখনো স্বাভাবিক হতে পারবে না। নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতে, ইতিহাসে মালায়ার মতো শতাধিক ঘটনা আছে। ২০০০ সালের দিকে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মালায়াকে।