প্রতি ১০ জনের ৪ জন হারাবে চাকরি, দায়ী এআই

শামস তারেক আজিজ

জানুয়ারি ৩০, ২০২৪, ১১:৫২ এএম

প্রতি ১০ জনের ৪ জন হারাবে চাকরি, দায়ী এআই

সংগৃহীত ছবি

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপ্লব তথা বিকাশ মানুষের জীবনকে যেমন সহজ করছে তেমনি শঙ্কায় ফেলেছে অনেককেই। সাম্প্রতিককালে প্রায় সকল কাজেই ব্যবহার হতে শুরু হয়েছে এআই, তবে সম্প্রতি চাকরিক্ষেত্রে এআই এর প্রভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংস্থাটি ধারণা করছে সামনের দিনগুলোতে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান কেড়ে নিবে এআই।

চ্যাট জিপিটি, গুগল বার্ড, মাইক্রোসফট কো-পাইলটের মতো জেনারেটিভ এআই চ্যাটবট আসার পর থেকেই অনেকেই ধারণা করছিলেন কর্মক্ষত্রে এআই ধীরে ধীরে মানুষের স্থলাভিষিক্ত হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোও এক সময় নিজেদের খরচ কমাতে এআই এর সাথে নিজেদের মানিয়ে নিবে। আর এ ধরণের ভীতিই যেন সত্যিতে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বিশ্বের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের এক সম্মেলনে আইএমএফের প্রধান বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণ সামনে নিয়ে আসেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে, ক্রিস্টালিনা বলেছেন, “নীতিনির্ধারকদের উচিত প্রযুক্তি যেন আরও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি না করতে পারে সে বিষয়ে অগ্রিম পদক্ষেপ নেওয়া। পাশাপাশি এই বিস্তারের যে সম্ভাব্য সংকটজনক প্রবণতা আছে সেটিকে মোকাবিলা করা।”

আইএমএফের বিশ্লেষণে জানা যায়, এআইয়ের কারণে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর চাকরি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে, যা প্রায় ৬০ শতাংশ। তবে, এসব দেশের যেসব কর্মী এআইয়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে তাদের উৎপাদনশীলতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি বাড়বে।

আবার অন্য দিকে, বর্তমান সময়ের অনেক কাজ যেগুলো কর্মীরা সম্পাদন করে থাকে, সামনের দিনে সেগুলো এআই অনায়াসে করে দেবে। এর ফলে শ্রমের স্বাভাবিক চাহিদা কমবে,  প্রভাবিত হবে মজুরিও এবং এমনকি চাকরিও কেড়ে নিতে পারে এআই।  

তবে, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল কিংবা যেসব দেশ নিম্ন আয়ের সেসব দেশের জন্য আশার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। এই বিশ্লেষণ অনুসারে, এরকম দেশগুলো তুলনামূলক কম প্রভাবিত হবে। এই প্রযুক্তি নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে মাত্র ২৬ শতাংশ চাকরিকে প্রভাবিত করবে, বলছে আইএমএফ। এবিষয়ে ক্রিস্টালিনা  বলেন, এসব অনেক দেশেরই এমন অবকাঠামো বা দক্ষ জনশক্তি নেই যা এআইয়ের সঙ্গে মিলে অতিরিক্ত সুবিধা আদায় করতে পারবে। যা দেশগুলোর মাঝে আয়ের বৈষম্য বাড়াতে পারে।

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা জানান, “এরকম দেশগুলোর জন্য ব্যাপক সামাজিক সেফটি নেট স্থাপন করা এবং দুর্বল কর্মীদের জন্য পুনরায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি করার মাধ্যমে আমরা এআই রূপান্তরকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে পারি, মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা করতে পারি এবং বৈষম্য রোধ করতে পারি।”

Link copied!