ঘূর্ণিঝড়, প্লাবন, ঝড়ো হাওয়াসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সতর্কতা থাকার আহবান জানিয়ে বিভিন্ন ধরণের সংকেত জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। জারি করা প্রতিটি সংকেতের আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য দেওয়া সেই সংকেতগুলোর অর্থ তুলে ধরা হলো।
বন্দরগেুলোর জন্য বিভিন্ন সংকেত :
১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: জাহাজ বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সংকেত দ্বারা বোঝায় দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। আর ওই অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার থাকবে। এটি যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।
২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : এই সংকেত দ্বারা বেঝানো হয়, দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। আর ওইস্থানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি এখনই বন্দরে আঘাত হানবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।
৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত: বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বোঝাতে এই সংকেত জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সংকেত দ্বারা বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে বোঝায়।
৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত: এই সংকেতে বোঝা যায় বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।
৫ নং বিপদ সংকেত: আবহাওয়া অধিদপ্তর এই সংকেত তখনই জারি করে যখন বন্দর ছোট কিংবা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার থাকবে। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৬ নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার থাকবে। ঝড়টি বন্দরকে উপর বা ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৭ নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্ঝাবহুল এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৮ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।
১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত:এই সংকেতের মাধ্যমে বোঝা যায়, আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।