উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে ঘিরে সৈকতের স্বপ্ন

তাহমিদ সাকিব

ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৯:৫৩ পিএম

উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে ঘিরে সৈকতের স্বপ্ন

উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে প্রায় চার হাজার বইয়ের সমাহার। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইটে প্রবেশ করলে চোখে পড়তো ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। অথচ সময়ের ব্যবধানে জায়গাটি এখন লাইব্রেরিতে রূপ নিয়েছে। যে কেউ সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারে। 

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে,  সন্ধ্যা বা রাতের দিকে সেখানে লোকের সমাগম বেশি ঘটে। কেউ বই হাতে নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখে, কেউ বসে গল্প করে, কেউবা বই হাতে ছবি তুলে। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত লাইব্রেরির পথচলা শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত এই লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা।

তানভীর হাসান সৈকতের স্বপ্ন

তানভীর হাসান সৈকত চেয়েছিলেন একদিকে টিএসসির পাশের এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে যেন ময়লা আবর্জনার স্তুপ না থাকে, অন্যদিকে উন্মুক্ত লাইব্রেরির মাধ্যমে শিল্প সংস্কৃতির চিন্তা যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবেশ করে-- এমন লাইব্রেরি করার চিন্তা কিভাবে মাথায় এসেছিল জানতে চাইলে তিনি এসব বলেন। 

তিনি আরও বলেন, আমরা তো মফস্বল শহরে বেড়ে উঠেছি। আর থেকেই তো বই পড়ার প্রতি ঝোঁক ছিল। জেলা শহরগুলোতে পাবলিক লাইব্রেরি ছিলো। সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তাম। কিন্তু আমার যেটা মনে হয়েছে, আমাদের দেশে উন্মুক্ত লাইব্রেরির কনসেপ্টটা তেমনভাবে নেই। আমি মনে করি লাইব্রেরি হওয়া উচিত উন্মুক্ত। সবাই সেখান থেকে বই নিয়ে পড়বে। সেই চিন্তা থেকেই এই উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

তানভীর হাসান সৈকত মনে করেন বই পড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের লোকসংস্কৃতি ও আমাদের হারানো ঐতিহ্যের দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত।সে কারণে তিনি উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রাঙ্গনেই শিল্প সংস্কৃতি চর্চারও সুযোগ রেখেছেন। এই প্রাঙ্গণে গান বাজনা, নৃত্যসহ লোকসংস্কৃতির চর্চার আয়োজন করেন তিনি।

“আমি চাই প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত এই উন্মুক্ত লাইব্রেরি ছড়িয়ে পড়বে। মানুষ বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবে। তারা আমাদের ইতিহাস সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হবে” -- এটাই আমার স্বপ্ন।

সৈকতের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে প্রায় চার হাজার বইয়ের সমাহার। গল্প, উপন্যাস, কবিতা, শিশুদের বই, ইতিহাস, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীসহ বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বই। চলে সাপ্তাহিক পাঠচক্রের আয়োজনও।  বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, পুস্তক পর্যালোচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

প্রতি সপ্তাহে উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক গুরুত্ববহ বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন হয়।  এ ছাড়া পালাগান, লালন সংগীত, কাওয়ালি, চৈত্র-সংক্রান্তি উদযাপন, সানসেট সোনাটার মতো আধুনিক গানের কনসার্টের আয়োজন করে থাকে উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

Link copied!