ডিসেম্বর ১৯, ২০২১, ১১:৩৮ পিএম
বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে অনুমতি ছাড়া ওষুধ সেবনের পরামর্শ (প্রেসক্রিপশন) দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সভায় অংশ নেন। আর মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষ থেকে সভায় যুক্ত হন। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “অধ্যাদেশগুলোকে আইনে পরিণত করার জন্য একটা বিধান ছিল। ১৯৮৩ সালের একটি অর্ডিন্যান্সকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এতে রয়েছে ৫০টি ধারা। আইনে ঢাকায় একটি আয়ুর্বেদিক বোর্ড থাকার কথা বলা হয়েছে। এই বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যে কোনো স্থানে শাখা করা যাবে।”
কাউন্সিলে একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, চেয়ারম্যান সভাপতি এবং একজন রেজিস্ট্রার থাকবে। বছর শেষে বোর্ড সার্বিক প্রতিবেদন সরকারকে দেবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খসড়া আইন অনুযায়ী মেডিকেল কাউন্সিলের মতো একটি কাউন্সিল থাকবে জানিয়ে সচিব বলেন, “তারা একাডেমিক বিষয়গুলো দেখবে। বোর্ড কাউন্সিল নির্বাচন করবে। তারা না পারলে সরকার সভাপতি নির্বাচন করে দেবে। কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হবে তিন বছরের জন্য। কাউন্সিলই নির্বাচন করবে সভাপতি।”
কাউন্সিলে ১৬ ক্যাটাগরির সদস্য থাকবেন। এরমধ্যে তিনজন সংসদ সদস্য যাদের স্পিকার মনোনয়ন দেবেন বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “ডিজি হেলথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, চট্টগ্রাম রাজশাহী ও খুলনা মেডিকেল থেকে মেডিসিন অনুষদের একজন ডিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্মসচিব, অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের রেজিস্ট্রার, সরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ এবং বেসরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ- এরকম প্রায় ১৯-২০ জন সদস্য থাকবেন।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “কাউন্সিলের কাজ হলো- ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন, গবেষণা বা বিশেষ শিক্ষা প্রবর্তন করাসহ অন্যান্য গবেষণা, আর্থিক স্বীকৃতি এবং প্রকাশনা।”
ইউনানি চিকিৎসকরা ‘ডাক্তার’ ব্যবহার করতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সেটা কাউন্সিল নির্ধারণ করবে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আইনে কিছু সাজার বিধানও রাখা হয়েছে। কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মিথ্যা উপাধি ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে।”
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “অনুমোদনহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিলেও এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে। এছাড়া কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ডিগ্রির অনুকরণ করলে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে।”