নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. একরামুল করিম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, “আপনি নোয়াখালী তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি করেছেন, যে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আওয়ামী লীগের অনেক কষ্ট হবে। আপনি কেন বুঝতে পারছেন না যে নেত্রী আপনাকে অনেক জায়গায় চুপ থাকতে বলেছেন। সুবিধাবাদী কিছু লোক ছাড়া অধিকাংশ লোকের কাছে আপনি ঘৃণিত।”
১৮ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই লাইভে এই সংসদ সদস্য বলেন, “আসসালামু আলাইকুম প্রিয় নোয়াখালীবাসি। আমাকে চিনতে পেরেছেন কিনা জানি না। আমার নাম একরাম চৌধুরী। ৩ বারের এমপি। সদর-সুবর্নচরের আপনাদের আদরের চৌধুরী। আমার হার্টে ৫ বার রিং বসিয়েছি। অনেক চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে ভালবাসা দিতে। ভালবাসা পেয়েছিও। এর মধ্যে কিছু ঘটনা আমাকে ব্যথিত করেছে।”
“আমার ছোটকালের বন্ধু নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি পিন্টুকে টেলিফোনে অনেক আজে-বাজে কথা বলেছি এ কারণে আমার স্ত্রী আমাকে ভয়েস এসএমএস পাঠিয়ে বলেছেন, তোমার চেহারা দেখার চেয়ে তোমার মৃত্যুর চেহারাটা দেখাই ভালো। এতে আমি খুবই ব্যথিত হয়েছি।”
“আজ লাইভে আসার কারণ হলো, নোয়াখালী বিএনপির ঘাঁটি ছিল। দীর্ঘ ২০ বছর পরিশ্রম করে এটাকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বানিয়েছি,” যোগ করেন তিনি।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সুবর্নচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে জালিমের চেয়েও খারাপ বলে আখ্যা দিয়ে একরাম বলেন, “তিনি বিগত ২০ বছর ধরে চরবাটায় দুঃশাসন করেছেন। তিনি দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীকে এবং ওবায়দুল কাদের ভাইকে ভুল বুঝিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হয়েছেন। সেটা বন্ধ করা আমার জন্য মিনিটের ব্যাপার ছিল মাত্র। কিন্তু আমি তা করিনি। ওবায়দুল কাদের সাহেব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সুবিধার জন্য।”
“আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবের বিরুদ্ধে ভোট করেছিলাম। প্রচুর ভোট পেয়েছিলাম। নেত্রী আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে দলে টেনে নিয়েছেন। ২০০৮ সালে এসে আমাকে আবার সদর আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন। সে নির্বাচনে মালেক উকিল সাহেবের পরিবার মেজর মান্নানের ভোট করেছিলেন।”
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “তিনি তার ভাই কাদের মির্জাকে আমার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য লেলিয়ে দিয়েছেন।”
কাদের মির্জাকে প্রশ্ন করে একরাম বলেন, “আপনি যে আজ সাধু সাজেন, আপনি আমার কাছ থেকে কত কোটি টাকা নিয়েছেন? কোম্পানিগঞ্জের মানুষ সারাজীবন আপনাকে ঘৃণা করবে।”
“আপনাকে রাজাকার পরিবারের ছেলে বলেছি এ কারণে তো আপনার ভাই আমাকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দিয়েছেন। আপনি নিজেই তো লাইভে এসে বলেছেন, আপনার বাবা, আপনার চাচা রাজাকার ছিলেন। বড় বড় মোটাতাজা গরু হিন্দুদের বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে আসতেন। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।”