নভেম্বর ১১, ২০২২, ০১:৪৩ পিএম
বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডে একটি নৌকা ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারী একটি সূত্র। এতে মামলাটির নতুন মোড় নিচ্ছে। পেশাদার মাদক কারবারিদের হাতে ফারদিন খুন হয়েছেন বলে সেই সূত্র বলছে। গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার রাতে ফারদিন কেরানীগঞ্জ, পুরান ঢাকার জনসন রোড এবং রূপগঞ্জ ও ডেমরাসংলগ্ন চনপাড়া এলাকায় অবস্থান করছিলেন। মধ্যরাতে তিনি ছিলেন চনপাড়া এলাকায়। সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রযুক্তিগত তদন্ত এবং স্থানীয়দের সাথে কথা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিনই পেশাদার খুনিরা ফারদিনকে হত্যার পর নৌকাযোগে লাশটি ডাম্পিং করতে নিয়ে যায়।
সূত্রের ভাষ্যমতে, পরীক্ষার আগের দিন মধ্যরাতে ফারদিনের কেরাণীগঞ্জ, জনসন রোড ও চনপাড়া যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছে একাধিক সংস্থা। মূলতঃ মাদক কেনার জন্য ফারদিন কেরানীগঞ্জ ও জনসন রোডে যান। কয়েকটি জায়গায় কিনতে না পেরে শেষমেশ তিনি যান ডেমরা সংলগ্ন চনপাড়ায় পূর্বপরিচিতদের কাছে। সেখানে ফেনসিডিল কেনার চেষ্টা করেন তিনি। ফেনসিডিলের দরদাম নিয়ে চনপাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহীন ওরফে সিটি শাহীন ও তাঁর লোকজনের সাথে ফারদিনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আট-দশজন মিলে ফারদিনকে বেধড়ক পেটায়। পরে ওই রাতেই শাহীন ও তাঁর লোকজন ফারদিনের নিথর দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
ফারদিন হত্যার তদন্তে যুক্ত এমন এক কর্মকর্তা একটি গণমাধ্যমকে বলেন, চনপাড়ায় যাঁর বাসার পেছনে নিয়ে মাদক কারবারিরা ফারদিনকে হত্যা করেছে, তাঁর নাম-পরিচয় জানতে পেরেছন তাঁরা। পুলিশকে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, হত্যার পর নৌকা ভাড়া করে ওই ছাত্রের লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এখন ওই নৌকার মালিককে খুঁজছে পুলিশ।
তবে ফারদিনের বাবা ও মামলার বাদী কাজী নূর উদ্দিন রানা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফারদিনের যে স্বভাব-চরিত্র এবং যাদের সঙ্গে ওর মেলামেশা, তাঁর তো চনপাড়ায় যাওয়ার কথা নয়। তাঁকে কখনও একটি সিগারেট ফুঁকতে দেখিনি। সে কেন মাদকের স্পটে যাবে? এ রকম কথা শুনতে খারাপ লাগছে। সব সময় টিউশনি-পড়াশোনা নিয়ে সে ব্যস্ত থাকত।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ ও র্যাব আলাদাভাবে বৃহস্পতিবার চনপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। র্যাব জানায়, তাঁদের অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে সিটি শাহীন গুলিবিদ্ধ হয় এবং পরে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।