ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে অফশোর অনুসন্ধান বাতিল বাংলাদেশের, ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০১:২৮ পিএম

ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে অফশোর অনুসন্ধান বাতিল বাংলাদেশের, ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) দুইটি ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির পারফরম্যান্স ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করেছে, যা বাংলাদেশে তাদের অফশোর অনুসন্ধান প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করে। দুটি কোম্পানি হলো ওএনজিসি ভিদেশ (OVL) এবং অয়েল ইন্ডিয়া (OIL)

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন জানিয়েছে, ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহারের পর উভয় কোম্পানি বাংলাদেশের দুটি অফশোর ব্লক থেকে নিজস্ব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

এই পদক্ষেপ আসে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে। বিশেষ করে, গত বছর ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ তাঁর ফেরতের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠ করলেও নয়াদিল্লি সাড়া দেয়নি। পরিস্থিতির কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, জুস, খাদ্যপণ্য এবং তুলাজাতীয় পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে, এবং জবাবে বাংলাদেশ ভারতের সুতা রপ্তানি স্থলবন্দর থেকে নিষিদ্ধ করেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের সময় ওএনজিসি, অয়েল ইন্ডিয়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) যৌথ কনসোর্টিয়াম গঠন করে দুটি অফশোর গ্যাস ব্লকে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওভিএল ওআইএল-এর প্রতিটির শেয়ার ছিল ৪৫%, বাপেক্সের শেয়ার ১০%

ওইল ইন্ডিয়ার সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা এসএস-০৪ এবং এসএস-০৯ ব্লক থেকে সরে যাচ্ছে এবং কূপ, সম্পদ অসম্পূর্ণ কাজের জন্য ৩০৭.৪৩ কোটি টাকা প্রভিশন রাখছে। অনুরূপভাবে, ওএনজিসি জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে পেট্রোবাংলা এসএস-০৪ এবং এসএস-০৯ ব্লকের জন্য যথাক্রমে ১৬. মিলিয়ন এবং ১৬. মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করেছে। জুনে ওভিএল -এর বোর্ড উভয় ব্লকের উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) বাতিলের অনুমোদন দিয়েছে।

ওএনজিসি ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উভয় ব্লকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনযোগ্য জ্বালানি আবিষ্কারের নিশ্চয়তা না থাকার কারণে অনুসন্ধান কার্যক্রমে প্রায় ৩১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

অয়েল ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশ ২০১২ সালে তাদের এসএস-০৪ এবং এসএস-০৯ ব্লকে অনুসন্ধানাধিকার দিয়েছিল, যা মোট ১৪,২৯৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের। ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের প্রাথমিক অনুসন্ধান মেয়াদের জন্য পিএসসি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়।

অনুসন্ধান কার্যক্রমের মধ্যে ছিল বাধ্যতামূলক সিসমিক জরিপ, একটি অনশোর কূপ খনন এবং অফশোর কূপ খননের প্রস্তুতি। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত উভয় ব্লকে অয়েল ইন্ডিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩১.৮৩ মিলিয়ন ডলার।

Link copied!