প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় যে মামলা হয়েছে, সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে তাঁকে কারাগারে পাঠান বিচারক।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক হুমায়ন কবীর খান তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর, পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকের ওপর হামলা, গাড়ি পোড়ানোসহ সামগ্রিক অস্থিতিশীলতার বিষয় আদালতের নজরে এনেছি। এগুলো পরিকল্পিত, মির্জা ফখরুলের নির্দেশেই ঘটানো হয়েছে। তাই আমরা তার জামিনের বিরোধিতা করেছি। বিজ্ঞ আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বিএনপি নেতাদেরকে হেনস্তা করতেই এই মামলা। আমরা জামিন চেয়েছি কিন্তু বিচারক জামিন দেননি। ডিভিশন চেয়েছি, ডিভিশন দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিবকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি নেতারা যখন মিটিং করেছেন তখনই পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। এসব হামলার দায় দলটির নেতারা এড়াতে পারেন না। এজন্যই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ডিবির সদস্যরা মির্জা ফখরুলের বাসায় গিয়ে তাঁকে আটক করেন। তাঁর স্ত্রী রাহাত আরা বেগম সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের সদস্যরা গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বাসার সবার সাথে কথা বলেন। এরপর ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ (চিত্র) ও হার্ডডিস্ক নিয়ে চলে যান তাঁরা। এর ঠিক ১০ মিনিট পর আবার ফিরে এসে মির্জা ফখরুলকে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিল। সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য ও যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশের ৪১ ও আনসারের ২৫ জন সদস্য। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন সাংবাদিক। সংঘর্ষে হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির।
মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ পরে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। বিএনপি কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এছাড়া কাকরাইল পুলিশ বক্সেও আগুন দেয় তারা। এ ঘটনার পর কাকরাইল মোড়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।