‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব জানান, অধ্যাদেশে ‘গুম’ শব্দটির সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং একে চলমান অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। গোপন আটককেন্দ্র, যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত, স্থাপন ও ব্যবহারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুম-সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অধ্যাদেশে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেখানে অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্নের বাধ্যবাধকতা থাকবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী, তথ্য প্রকাশকারী ও সাক্ষীর অধিকার ও সুরক্ষা, ক্ষতিপূরণ এবং আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষার লক্ষ্যে একটি বিশেষ তহবিল ও তথ্যভান্ডার গঠনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, এই আইনটি জাতিসংঘের গুম প্রতিরোধ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুসরণ করে প্রণীত হয়েছে। বাংলাদেশ গত বছরের ২৯ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের মাধ্যমে ওই কনভেনশনে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়।
তিনি একে একটি “ঐতিহাসিক আইন” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার গুমের রাজত্ব কায়েম করতে পারবে না, এবং ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত গোপন আটককেন্দ্রের যুগের অবসান ঘটবে।”