জুলাই ৩০, ২০২৪, ১০:৩২ এএম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা কন্টেন্ট তৈরি করে বিতর্কিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ নৌপরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। দারিদ্রতাকে জয় করেছি। সক্ষমতা ও মর্যাদার জায়গায় পৌঁছেছি। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল আমাদেরকে মর্যাদার জায়গায় নিয়ে গেছে। সেটি অনেকের পছন্দ না। সেজন্য তারা তিনদিন দেশে তান্ডব চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা কন্টেন্ট তৈরি করে বিতর্কিত করা হচ্ছে। কারণ তাদের ধারণা প্রধানমন্ত্রীকে নামিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশকে নামিয়ে দেওয়া যাবে। দেশে একটি ভিন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। দেশের স্বাধীনতায় ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্রদের প্রতি স্নেহ ও ভালবাসা আছে। ছাত্ররা নিরাপদ সড়ক এর জন্য আন্দোলন করেছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এর সুন্দর সমাপ্ত করেছে। ২০১৮ সালেও কোটা আন্দোলন সমাধান হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুধু নৌ সেক্টর নয় সকল ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। নৌ সেক্টরের সার্বিক ব্যবস্থার আরও উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করছে। আমাদের সক্ষমতা ও সম্পদ বাড়ছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হচ্ছে, নতুন বন্দর ‘পায়রা বন্দর’ নির্মাণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হচ্ছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থায় ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়ে সম্মানিত হয়েছে। নতুন নতুন পর্যটকবাহি ক্রুজ জাহাজ আসছে। বিআইডব্লিউটিএ’র বিভিন্ন সেবার পেমেন্ট অনলাইনে নেওয়া হচ্ছে, আরও নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”
ফ্রান্সে অলিম্পিক গেমস এর মার্চপাস্ট নদীতে জাহাজে হওয়ার প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকারের ধারাবহিকতা থাকলে বাংলাদেশেও বুড়িগঙ্গায় এ ধরনের জাহাজ চলবে।”
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার ও কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রদের সমঝোতা চলছে, স্বস্থির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, ঠিক সে সময়ে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করা হল। দেশে অরাজক পরিস্থিতির চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে। ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র, অভিভাবক, পথচারী কেউ বাদ যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। ভয়াবহ অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন। তিনি ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন। বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা দিয়ে সবকিছু মোকাবিলা করলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সকল পরিস্থিতি ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। প্রতিমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের দাবির বিষয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বলব। প্রতিটি জিনিস শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসব। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তারপরেও নিয়মের মধ্যে আসতে হবে। সে মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আমাদের সক্ষমতা হয়েছে, এখন মানবকাঠামো তৈরি করতে হবে। তাহলে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারব।”
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ নৌপরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এবিএম সফিউল আলম বুলু, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বেপারী ও সহসভাপতি মাহবুব হোসেন।