সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উত্তপ্ত রূপ নিয়েছে।
শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে উপ-উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার বিকেল থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।
শনিবার আড়াইটার দিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাইন উদ্দিন প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা গাড়ি আটকে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেয় এবং গাড়ির ওপর টাকা ছুড়ে প্রতিবাদ জানায়।
পরে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান তার বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা জুবেরি ভবনে উপ-উপাচার্য মাইন উদ্দিনসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষকরা বিক্ষোভ উপেক্ষা করে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ে যান এবং কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। এ সময় ক্যাম্পাসে টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, পোষ্য কোটা নো মোর’সহ নানা স্লোগান দেন। অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনের বাইরে জড়ো হয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান নেন।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য স্যারকে অবরুদ্ধ করে তার বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে আমরা জুবেরি ভবনের লাউঞ্জে বসি। ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে তারা বাধা দেয়। ধাক্কাধাক্কির মধ্যেই আমার হাতের ঘড়ি ও ১০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়।”
এর আগে শুক্রবার বিকালে একজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করলে পরে আরও ১০ জন শিক্ষার্থী এতে যোগ দেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ হুঁশিয়ারি দেন—‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহাল না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ভর্তি কমিটির সভায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে শর্তসাপেক্ষে ‘পোষ্য কোটা’তে ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য স্থায়ীভাবে ‘পোষ্য কোটা’ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৩ আগস্ট থেকে পুনর্বহালসহ আট দফা দাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি অংশ কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। প্রশাসনের আশ্বাসে ২৪ আগস্টের পর কর্মসূচি স্থগিত থাকলেও সম্প্রতি পুনরায় তা জোরদার করা হয়।