বদরুদ্দীন উমরের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ১২:১৫ পিএম

বদরুদ্দীন উমরের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাম তত্ত্বচর্চার মহিরুহ, সমাজতান্ত্রিক ভাবুক, গবেষক ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ।

সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সকালে বদরুদ্দীন উমরের মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদনপর্ব।

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ও ফরিদা আখতার।

বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদে মিনারে এসেছেন। তাঁরা তাঁর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বদরুদ্দীন উমরের মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। বাদ জোহর জানাজার পর জুরাইন কবরস্থানে বদরুদ্দীন উমরকে তাঁর মা-বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

গতকাল রোববার রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে মারা যান বদরুদ্দীন উমর। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। সর্বশেষ তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

বদরুদ্দীন উমরের জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায়। তার বাবা আবুল হাশিম ছিলেন অখণ্ড ভারতের রাজনীতিবিদ, বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। মুসলিম লীগের মধ্যে তার প্রগতিশীল রাজনীতির অভিমুখ ভারত ও বাংলার ইতিহাসচর্চার অন্যতম আলোচিত প্রসঙ্গ। মা মেহের বানু বেগম। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন।

বদরুদ্দীন উমর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ছাত্র থাকাকালেই ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে দর্শনের প্রভাষক হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পিপিই ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।

তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার লেখা গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। প্রথম গ্রন্থ সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে। বইটি বুদ্ধিবৃত্তিক মহলে প্রভূত সাড়া জাগায়। এ ছাড়া তার লেখা পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি শুধু ভাষা আন্দোলন নিয়ে প্রথম গবেষণাগ্রন্থ নয়, সুগভীর বিশ্লেষণের কারণেও অতুলনীয়। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন। একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন করে এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

Link copied!