মিয়ানমারের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান নেতা আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীর ভাই শাহ আলীকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাইমুল হক বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
নাইমুল হক জানান, ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নৌকার মাঠ এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী অবস্থান করছে এবং তারা বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে ড্রোন দিয়ে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ সেখানে বড় ধরনের অভিযান চালানো হয়। অভিযানের একপর্যায়ে অস্ত্র-ইয়াবা এবং কিছু নগদ টাকাসহ শাহ আলীকে আটক করা হয়। এ সময় সেখান থেকে অপহৃত একজন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য আটকে রেখেছিল। আটক শাহ আলীকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি কবে থেকে, কেন এই ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে দেশটি থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান নেন। তখন থেকেই এসব ক্যাম্পকেন্দ্রিক অপহরণ বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, খুন-ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছিল বলে অভিযোগ উঠে আরসার বিরুদ্ধে।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা কুতুপালং ক্যাম্পে বন্দুক হামলায় নিহত হন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নেতা মুহিবুল্লাহ। আরসার প্রত্যক্ষ মদদে মুহিবুল্লাহ খুন হন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এপিবিএন কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ অভিযানে নানা অভিযোগে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক গ্রেফতার হয়েছেন।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) নাইমুল হক গণমাধ্যমে বলেন, এ পর্যন্ত তথাকথিত আরসা নামধারী ১১৪ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। তাছাড়া মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, চোরাচালানে জড়িত, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত আরও ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।