অক্টোবর ১৭, ২০২২, ০৯:০৪ পিএম
খাদ্য নিয়ে রাজনীতি বন্ধ,খাদ্যের অপচয় রোধ এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খাদ্যের অভাব কেবল মনুষ্যসৃষ্ট বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’র (এফএও) সদর দফতরে আয়োজিত “বিশ্ব খাদ্য সম্মেলন- ২০২২” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিকার হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ওই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যূয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রকৃত অর্থে, আমাদের গ্রহে খাদ্যের কোন অভাব নেই। অভাব কেবল মনুষ্যসৃষ্ট। খাদ্য নিয়ে রাজনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ এবং কীটপতঙ্গ ও রোগের আক্রমণ এ সব কিছু আমাদের কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “অস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগ করা অর্থের ছোট একটি অংশও যদি খাদ্য উৎপাদন ও বিতরণে ব্যয় করা হয়, তবে এই পৃথিবীতে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না।”
যুদ্ধ, খাদ্য নিয়ে রাজনীতি ও অপচয় বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ করছি- যুদ্ধ থামান, খাদ্য নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করুন, খাদ্যের অপচয় রোধ করুন। এসবের পরিবর্তে খাদ্য ঘাটতি এবং দুর্ভিক্ষ কবলিত এলাকায় খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করুন। মানুষ হিসেবে, আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে প্রত্যেকেরই খাদ্য নিয়ে বেঁচে থাকার এবং সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে।”
বিভিন্ন হিসেবে অনুমান করা হয় বিশ্বের ৮০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ বা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশের বেশি মানুষ প্রতিদিন ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পাল্টা-পাল্টি নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি এখন আরও খারাপ হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ ব্যহত করছে এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে। প্রচুর সম্পদে পরিপূর্ণ এই বিশ্ব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য অবদান সেই সম্পদকে আরও বাড়িয়েছে;এ রকম বিশ্বে এই বঞ্চনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।”
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে উদ্বৃত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আসুন আমরা একসাথে এমন একটি বিশ্ব তৈরি করি যা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, যুদ্ধ এবং মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে পারে এবং মানবতার কল্যাণের জন্য বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন করতে পারে।”