সংসদে বিল পাস

খাদ্যদ্রব্য অবৈধ মজুতের সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ৫, ২০২৩, ১০:৩৪ পিএম

খাদ্যদ্রব্য অবৈধ মজুতের সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। আর এই অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য। কাল্পনিক নামে খাদ্যদ্রব্য বিপণনও অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হবে।

বুধবার (৫ জুলাই) ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৩’ উত্থাপন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিলে বলা হয়েছে, খাদ্যদ্রব্য বলতে বোঝাবে যেকোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য; যথা চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি। বিলে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এটা একটা ভয়াবহ আইন। এই আইনের আওতায় যে কাউকে যেকোনো সময় ধরা যাবে। ঘুষের একটা মহোৎসব শুরু হবে দেশে। এই আইনের ফলে দেশের কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াবে। কৃষকেরা ভালো দাম পাওয়ার আশায় অনেক সময় মজুত করেন। তাঁরাও এই আইনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হলেও মূলত এই জাতের কোনো ধান বা চালের অস্তিত্ব নেই। এই আইনের মাধ্যমে চালের পলিশিং বন্ধ করতে পারলে চার লাখ টন চালের অপচয় রোধ করা যাবে।

দেশ কীভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলো, এই প্রশ্ন রেখে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, কাঁচা মরিচের কেজি এক হাজার টাকা হওয়ার পর ভারত থেকে তড়িঘড়ি করে আমদানি করা হয়েছে। এখান থেকে বোঝা যায়, দেশে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন মন্ত্রী। কারণ, তিনি নিজেই একজন বড় মাপের গুদাম ব্যবসায়ী।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অপরাধ না করলেও তাঁকে সাজা ভোগ করতে হবে, এমন আইন কোথাও নেই।

এসব সমালোচনার জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন তাঁর চালের গুদাম আছে, তাহলে তিনি তা ওই ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রি করে দেবেন। তিনি বলেন, প্রকৃত মজুতদারদের চিহ্নিত করা সহজ বিষয়। কৃষকদের ওপর এই আইন প্রয়োগের কোনো আশঙ্কা নেই। এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালায় এ বিষয়ে আরও পরিষ্কার করা হবে।

Link copied!