মিতু হত্যা: স্বামী বাবুলের করা মামলা ফের দন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ৩, ২০২১, ০৪:৫৩ পিএম

মিতু হত্যা: স্বামী বাবুলের করা মামলা ফের দন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত

চট্টগ্রামে মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মেহনাজ রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। একইসাথে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফলে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে তার আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান।

বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন,  পিবিআইয়ের প্রতিবেদনের ওপর আমরা আদালতে নারাজি দিয়েছিলাম। শুনানি শেষে আজ আদালত আমাদের আবেদন নামঞ্জুর করেন। একইসাথে আদালত মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি পুনরায় চলবে।

আইনজীবী সাইমুল চৌধুরী বলেন, “একই অভিযোগ দুবার কেউ তদন্ত করতে পারে না। আইনগত কারণেই এটা পারে না। পরবর্তীতে অন্য কাউকে দিয়ে তদন্ত করতে হয়। আমরা আবেদন করব পুনঃতদন্ত কারা করবে সে বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে।”

পাঁচ বছর আগের ওই হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে চলতি বছরের গত মে মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। এর ভিত্তিতেই বাবুলকে আসামি করে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

অন্যদিকে ওই প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সিআইডি বা অন্য কোনো সংস্থার কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মাধ্যমে মিতু হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলাটির পুনঃতদন্ত চেয়েছিলেন বাবুল আক্তার।

গত ১৪ অক্টোবর দুপুরে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে আবেদনটি করেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। গত ২৭ এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে ওই আদালত আজ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

বাবুল আক্তারের নারাজি আবেদনে বলা হয়েছিল, ‘বাবুল ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি এ মামলার বাদি ছিলেন। তাকে আসামি করতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। সিনিয়র অফিসার থেকে মামলার তদন্তভার নিয়ে জুনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা দিয়ে মামলা তদন্ত করা বাবুল আক্তারের প্রতি অসম্মানজনকও। মূলত মহল বিশেষের কথা মোতাবেক সিনিয়র তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজ না করায় জুনিয়রকে দিয়ে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সড়কে খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। খুনিরা গুলি করার পাশাপাশি তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ঘটনার সময় বাবুল আক্তার ঢাকায় ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার নিজে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ১২ মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিতু হত্যা ছিল ‌‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’। বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় এটা সংঘটিত হয়। মিতুকে হত্যার জন্য তিন লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।এরপর একইদিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বাবুল আক্তার।

Link copied!