মার্চ ২৫, ২০২৩, ০৬:১১ পিএম
ঈশ্বরদী শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী শিলাইদহ নদীর ঘাটপাড়। সেখানে একটি প্রাডো গাড়ি দাঁড় করানো। কেউ ভাবছেন গাড়ির মালিক গাড়ি রেখে হয়তো নদীর ওপাড়ে গিয়েছেন। আবার কেউ ধারণা করেছেন এলাকায় বেড়াতে আসা কারও গাড়ি।
কিন্তু দুদিন এমন বিলাসবহুল একটি গাড়িকে পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ সৃষ্টি হয় মানুষের মনে। কাছে গেলে দুর্গন্ধও পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গাড়ির ভেতর থেকে বস্তাবন্দী এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের পর ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর খেয়াঘাট এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন জানান, মরদেহটি পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনের (২৬)। যে গাড়িটি তিনি চালাতেন সেটিতেই পাওয়া যায় তাঁর মরদেহ। গাড়িটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একজন রুশ কর্মকর্তা ব্যবহার করতেন।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নারীকে আটক করেছে ঈশ্বরদী থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আটক নারী ঈশ্বরদীর বাঁশেরবাদা এলাকার বাসিন্দা সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুন। ঘটনার পর থেকেই মমিন পলাতক। তিনি সম্রাটের সাথে গাড়ি চালক হিসেবে কাজ করতেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটকে হত্যার কথা স্বীকার করে সীমা দাবি করেন সম্রাট তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করলে বাঁচতে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জিয়াউর রহমান সীমার বরাত দিয়ে জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মমিনের বাসায় গিয়ে ‘মাথা ধরেছে’ বলে বিছানায় শুয়ে পড়েন সম্রাট। তার জন্য ওষুধ আনতে মমিন বাইরে গেলে সম্রাট মমিনের স্ত্রী সীমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। রেগে গিয়ে সীমা হাতুড়ি দিয়ে সম্রাটের মাথায় ও গোপনাঙ্গে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই সম্রাটের মৃত্যু হয়। মমিন ফিরে এসে সম্রাটের মরদেহ বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে তুলে শিলাইদহে নদীর পাড়ে রেখে আসেন।
দুদিন ধরে সম্রাটের খবর না পেয়ে শুক্রবার ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দেয় পরিবারের লোকজন। এরপরই ফেসবুকে সম্রাটকে খুন করা হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার সকালে শিলাইদহে মরদেহ উদ্ধারের পর সম্রাটের বাবা ও গাড়িটির মালিক সম্রাটের মরদেহ শনাক্ত করেন। সম্রাট পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের আলহাজ্ব ক্যাম্পের আবু বক্কারের ছেলে।