হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে সৌদি আরবের মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজ কার্যক্রম শুরু হয়। ৮ জিলহজ জোহর নামাজের আগে হজযাত্রীদের মিনায় পৌঁছানো সুন্নত। তাই হজযাত্রীরা রবিবার ভোরেই মক্কা থেকে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মিনায় যাচ্ছেন।
মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রাত্রীযাপন করাও সুন্নত আমল।হাজিদের রাত কাটানোর জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অসংখ্য তাবু স্থাপন করা হয়েছে।
পরে হাজিরা ৯ জিলহজ চলে যাবেন আরাফাতের ময়দানে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) আরাফাতের ময়দানে হজযাত্রীরা অবস্থান করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার পাশাপাশি ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত করবেন ময়দান। আরাফাতের ময়দনে অবস্থান করা হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ময়দানসংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারি পর এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লি হজ পালন করছেন। সৌদি গেজেট, আল রিয়াদ, আল বিলাদসহ সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ ১৬০ দেশ থেকে ১৬ লাখ পাঁচ হাজার মুসল্লি হাজির হয়েছেন মক্কায়। এর সঙ্গে সৌদি আরবের আরও চার লাখের বেশি মুসল্লি অংশ নেবেন।
সৌদি আবহাওয়া অফিস সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে হবে হজযাত্রীদের। মিনা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে।
নিরাপত্তা ও সেবা:
এবার হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও তাদের সেবায় দুই লাখ ৩৮ হাজার নিরাপত্তাকর্মী প্রস্তুত রয়েছেন। শনিবার দেশটির জননিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আল বাসামী এ তথ্য জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল রাবিয়া জানিয়েছেন, হজযাত্রীদের সেবায় এ বছর ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন। গরমসহ নানাবিধ কারণে কোনো হজযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে। মক্কা, মিনা, আরাফাত ময়দান ও মুজদালিফায় অ্যাম্বুলেন্স, অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্র ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব এলাকার পথে পথে হাজিদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তার জন্য বিভিন্ন ভাষার কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের হজযাত্রী:
বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২২ হাজার হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ৩২১ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন।
হজযাত্রী বহনকারী এয়ারলাইনস, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ ও হজ অফিসের বরাত দিয়ে হজ পোর্টালে এ তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের পরিবহন করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইনাস নামে সৌদি আরবের প্রথম বজেট এয়ারলাইন্স। চলতি বছর ৬১ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী পরিবহন করছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বাকি হজযাত্রী পরিবহন করছে সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাস।
বাংলাদেশে থেকে হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ৬০৩টি। গত ২১ মে বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। শেষ হয় ২৪ জুন। হজ পালন শেষে আসছে ২ জুলাই থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়ে শেষ হবে ২ আগস্ট।
এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় কোটা পূরণ করা যায়নি। কোটা পূরণে আরও দরকার ছিলো সাড়ে তিন হাজার হজযাত্রী।