আজ ১৩ জুন, ইভটিজিং প্রতিরোধ দিবস। নারী, মেয়েশিশু, কিশোরী এবং তরুণীদের উত্ত্যক্ত করার জন্য বখাটেদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৩ জুন ইভ টিজিং প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে এই ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার।
ইভ টিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি। করোনাকালেও বেড়েছে নারী নির্যাতনের হার। চলতি লকডাউনে রাস্তা-ঘাটে ইভটিজিংয়ের পরিমান কমলেও, অনলাইনে নারীরা নানাভাবে হেনস্থার স্বীকার হচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একরকম ঘটনা এখন প্রতিদিনই দেখা যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নারীদের লাইভ-শো অথবা পোস্টে হয়রানি মূলক মন্তব্য এখন নিত্য নৈমিত্তিক। এ ছাড়াও করোণায় ক্ষমতাশীল ব্যাক্তিদের বলপ্রয়োগে ধর্ষণের হার। নিজেদের ক্ষমতা প্রকাশ করতে ভিকটিমকে নিজের এলাকায় বল প্রয়োগে ধর্ষণ করছে বলেও খবর বেরিয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘করোনার সময় ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাই তারা তাদের গন্ডির মধ্যে ধর্ষণের মতো অপরাধ করছে।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ১ হাজার ৪৬৫ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। এর মধ্যে ১ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৬৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হন। যেখানে ২০১৯ সালে এক হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষিত হয়েছেন।
করোনাকালে যেমন বেড়েছে ধর্ষণের সংখ্যা, তেমনি বেড়েছে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ সূত্র জানায়, শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষনকে বলা হয় পেডোফেলিয়া। এটি এক ধরনের মানসিক বিকৃতি। আমাদের দেশের শিশুরা বেশির ভাগই গুড টাচ ও ব্যাড টাচ সম্পর্কে যানে না। তারা ভয়ে কাউকে কিছু বলে না।
বেসরকারি আরেক সংস্থা স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট মনে করে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের শিক্ষা পরিবার থেকেই শুরু করা দরকার। ছেলে শিশুদের পরিবারের নারী সদস্যদের সম্মান করার শিক্ষা দিতে হবে। আর মেয়ে শিশুকে বোঝাতে হবে সে মোটেও দুর্বল নয়।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, উত্যক্তকরণের কুফল ও ভয়াবহতা উপলব্ধি করে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় দিবসটি ঘোষণা করলেও একবারই সেটা জাতীয়ভাবে পালন করেছে। অথচ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি নিয়মিত পালনের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সম্ভব।