জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস থেকে সরাসরি সম্প্রচার করছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিন সদস্যের বেঞ্চ, বিচারক গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে রায় ঘোষণা করছেন। মামলার অন্যান্য আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের পর এই মামলাটি প্রথম মামলা হিসেবে শুরু হয়। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে প্রথমবার, যখন আসামি স্বেচ্ছায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজস্বাক্ষী) হিসেবে দোষ স্বীকার করে ঘটনার বিবরণ দিতে সম্মতি দেন। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন এই আবেদন করেন এবং তা মঞ্জুর করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউশন কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয় এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়। অভিযোগে তাকে জুলাই–আগস্টের নৃশংস ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, ১৪ জুলাই গণভবনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন এবং আন্দোলন দমন করতে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীর গুলি করে হত্যার, এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় গুম-খুনের ঘটনা, আর একটি মামলা মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, এ মামলাটি তার বিরুদ্ধে প্রথম রায় ঘোষণার মামলা।