চাকরির ভাইভা নিয়ে চিন্তায় আছেন?
জার্মান ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশে প্রতিবছর ২২ লাখ কর্মক্ষম লোক চাকরি বা কাজের বাজারে প্রবেশ করেন।
এমন অবস্থায় এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় নিজেকে সেরা হিসেবে প্রস্তুত করে তোলা। এতে শুধু একাডেমিক রেজাল্ট আপনাকে এগিয়ে রাখতে পারবে না। সাথে প্রয়োজন হবে কর্পারেট দুনিয়াতে বুদ্ধিমত্তার। আর কর্পারেট দুনিয়াতে প্রবেশের প্রধান পথ হলো ইন্টারভিউ। ইন্টাভিউ দিয়েই মনে জয় করে নিতে পারেন বসদের। আবার বিপরীতটিও হতে পারে। আজকে আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনার ইন্টারভিউ বোর্ডের পারফরমেন্সকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিবে।
১) “আমি” নয় “আমরা”
ইন্টারভিউ বোর্ডে “আমি” নয়, “আমরা” শব্দটিকে বেশি ব্যবহার করুন। এতে করে ইন্টারভিউয়ার কোম্পানির প্রতি আপনার আন্তরিকতা বুঝতে পারবে।এর অর্থ আপনি নিজেকে তাদের কোম্পানির একটি অংশ হিসেবে ভাবছেন- এমনটাই প্রকাশ পাবে।
২) নমনীয়তা
ইন্টারভিউ বোর্ডে নমনীয় হয়ে থাকুন। ইগো থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন। এতে করে ইন্টারভিউয়ার বুঝতে পারবেন আপনি নিজের ভুলগুলো স্বীকার করতে পিছপা হবেন না। যার কারণে, টিমে আপনি বেস্ট কন্ট্রিবিউশন করতে পারবেন।
৩) নেতৃত্ব মনোভাব
আপনি যে পদের জন্যেই এপ্লাই করুন না কেন আপনার নেতৃত্বের গুণাবলি প্রকাশ করতে হবে। লিডারশিপ স্কিল আপনার চাকুরীর পথকে আরো সুগম করে তুলবে। পাশাপাশি আপনাকে প্রকাশ করতে হবে, লিডারশিপকে আপনি এনজয় করেন এবং যেকোন পজিশন থেকে আপনি লিড দিতে পারবেন।
৪) পরিকল্পনা
অনেক সময় ইন্টারভিউ বোর্ডে পরিকল্পনার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। এটার জন্যে কোম্পানির প্রোফাইল ঘেটে একটা ব্যাসিক ৩০/৬০/৯০ দিনের একটা পরিকল্পনা তৈরী করতে পারেন। এতে করে আপনি কোম্পানিকে কতটা কন্ট্রিবিউট করতে পারবেন তার বহিঃপ্রকাশ হবে।
৫) সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা
কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে আপনাকে দোটানায় পড়তে হতে পারে। তাই নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমটাকেও আপনার প্রকাশ করতে হবে।
৬) সুযোগ
কোম্পানির সাথে কাজ করার সুযোগ পেলে আপনি যে আনন্দিত হবেন তা প্রকাশ করুন। নিজের এক্সপ্রেশন দিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডকে এটি বুঝিয়ে দিন।
৭) সাফল্য
ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার সাফল্য প্রকাশ করা জরুরী। একই সাথে আপনি সাকসেসকে যে একপাক্ষিক ভাবেন না। তাই সাকসেসে অন্য কর্মীদের একটা ভূমিকা থাকবে এটা প্রকাশ করা উচিৎ। এতে করে টিমের সাথে আপনি কতটা এনগেজ হতে পারবেন তাই প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি নিজের সাফল্যের কথাগুলো গল্প আকারে উপস্থাপন করুন। সে গল্পে আপনার সংগ্রাম এবং কি কি বিরূপ বিষয় আপনি অতিক্রম করে এসেছেন এসব প্রকাশ করুন।
৮) মিশন
প্রতিটি কোম্পানির একটি মিশন থাকে। ইন্টারভিউতে যাবার আগে সেই মিশন সম্পর্কে যথাযথ ধারণা নিয়ে যান। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার কাছে যে প্রশ্ন কিংবা স্ট্রাটেজি জানতে চাইবে তার সাথে মিশনকে যুক্ত করে দিন এবং এমনভাবে যুক্ত করে দিন যেন তাঁরা বুঝতে পারে আপনি কোম্পানির মিশন, ভিশন নিয়ে একটা রিসার্চ করেছেন।
৯) খোঁজ খবর
ইন্টারভিউ বোর্ডে যাবার আগে কোম্পানির রিসেন্ট খবরাখবর জেনে নিন। কোম্পানি নিয়ে কোন আর্টিকেল কিংবা প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তা পড়ে নিন। কথার ফাঁকে ফাঁকে এসব তথ্য দিন। এতে করে আপনার ইন্টারভিউ আরো ইনফরমেটিভ হয়ে উঠবে।
১০) ধন্যবাদজ্ঞাপন
ইন্টারভিউয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। ইন্টারভিউয়ের শেষে অবশ্যই “ধন্যবাদ” কিংবা “থ্যাংক ইউ” বলে বোর্ড থেকে বেরিয়ে আসুন। এতে করে আপনার বিনয়ী মনোভাব প্রকাশ পাবে।
এমন সব ছোট ছোট বিষয় লক্ষ্য রেখে পছন্দের চাকুরীটিকে নিজের করে নিতে পারেন। অভিযাত্রীর পক্ষ থেকে আপনার জন্য শুভকামনা।