জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
বিশ্ববিখ্যাত সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেল করপোরেশন ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রায় ২৪ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে—যা কোম্পানিটির মোট কর্মীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
ব্যয় সংকোচন এবং পুনর্গঠন নীতির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন ইন্টেলের নতুন সিইও লিপ-বু ট্যান।
এই ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি বাতিল করা হচ্ছে জার্মানি ও পোল্যান্ডে বহুমূল্য কারখানা সম্প্রসারণ প্রকল্পগুলো।
২০২৪ সালের শেষে ইন্টেলের মোট কর্মী ছিল ৯৯,৫০০ জন, যা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কমিয়ে ৭৫,০০০-তে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে এরইমধ্যে বেশ কিছু ছাঁটাই সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে ব্যবস্থাপনা স্তরের প্রায় অর্ধেক ধ্বংস করা হয়েছে এবং পুনর্গঠনের খরচ বাবদ ১.৯ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
একটি কর্মী বার্তায় ট্যান বলেন, “আর অন্ধভাবে বিনিয়োগের সুযোগ নেই। প্রতিটি বিনিয়োগ অর্থনৈতিকভাবে যৌক্তিক হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কেবল সেই পণ্যই তৈরি করব, যেটা গ্রাহকের দরকার এবং যেটা সময়মতো পৌঁছাবে। ধারাবাহিক কার্যকারিতার মাধ্যমে আমরা তাদের আস্থা অর্জন করব।”
সাম্প্রতিক প্রান্তিকে ইন্টেল ২.৯ বিলিয়ন ডলারের নিট ক্ষতি এবং ১২.৯ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব অর্জন করেছে। এটি কোম্পানির টানা ছয় প্রান্তিকে ক্ষতির রেকর্ড, যা গত ৩৫ বছরে সবচেয়ে দীর্ঘ।
পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে একটি বড় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৩,০০০ কর্মসংস্থান হতো।
একইসঙ্গে পোল্যান্ডে একটি অ্যাসেম্বলি ও টেস্টিং সুবিধা তৈরির পরিকল্পনাও বাতিল করা হয়েছে, যেখানে ২,০০০ কর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। ২০২৪ সালেই এই প্রকল্প দুটি স্থগিত করা হয়েছিল, আর এবার তা পুরোপুরি বন্ধ করা হলো।
এছাড়া, ইন্টেল কোস্টা রিকায় তাদের অ্যাসেম্বলি ও টেস্টিং কার্যক্রম একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে সেখানকার ৩,৪০০ কর্মীর মধ্যে ২,০০০ জনের বেশি প্রভাবিত হবেন। এসব কার্যক্রম এখন স্থানান্তরিত হবে ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায়।
এদিকে, ওহাইওতে ইন্টেলের ২৮ বিলিয়ন ডলারের চিপ ফ্যাক্টরি নির্মাণ প্রকল্প, যেটি ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল, সেটির কাজও আরও বিলম্বিত হচ্ছে।
ইন্টেলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ডেভিড জিন্সনার জানিয়েছেন, প্রকল্পের অগ্রগতি এখন বাজার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধীর গতিতে চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের চিপস অ্যাক্ট থেকে প্রাপ্ত সরকারি অর্থায়নের এই প্রকল্প এখন ২০৩০ সালের পরেও শেষ নাও হতে পারে।
সাম্প্রতিক বিনিয়োগ নীতির সমালোচনা করে সিইও ট্যান বলেন, “গত কয়েক বছরে আমরা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, খুব তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ করেছি—যার চাহিদা ছিল না। এর ফলে আমাদের কারখানাগুলোর কাঠামো অপ্রয়োজনীয়ভাবে খণ্ডিত ও অব্যবহৃত রয়ে গেছে।”