জুলাই ৫, ২০২৫, ১২:৩১ পিএম
সিরিয়ার আরব প্রজাতন্ত্র বৃহস্পতিবার রাজধানী দামেস্কে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের নতুন রাষ্ট্রীয় প্রতীক উন্মোচন করেছে।
নতুন প্রতীকে ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণাভ ঈগলকে আধুনিক রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা দেশটির গৌরবময় ইতিহাস, ঐক্য ও নাগরিক ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নতুন প্রতীকে যুদ্ধবাদী ভাবমূর্তি বাদ দিয়ে ঈগলের মাথার ওপরে রাখা হয়েছে তিনটি তারকা, যা প্রতীকীভাবে জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এটি রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে জনগণের ক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। ঈগলের প্রতিটি ডানায় সাতটি করে পালক রয়েছে, যা মিলে সিরিয়ার ১৪টি প্রদেশকে নির্দেশ করে।
এছাড়া এর লেজে রয়েছে পাঁচটি পালক, যা দেশের পাঁচটি ভৌগোলিক অঞ্চল—উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় সিরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করে।
কর্মকর্তারা নতুন এই জাতীয় প্রতীককে “দৃশ্যমান রাজনৈতিক চুক্তি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা নাগরিক-রাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন ভিত্তি স্থাপন করে। তাদের ভাষায়, এই প্রতীক একটি নিরাপত্তাকেন্দ্রিক রাষ্ট্র থেকে একটি জনগণকেন্দ্রিক রাষ্ট্রে উত্তরণের ইঙ্গিত দেয়।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাআ এই পরিবর্তনকে `জনগণের কাছ থেকে উঠে আসা এবং তাদের সেবা দেওয়া` সরকারের প্রতিফলন হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, এটি ১৯৪৫ সালের স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় দাঁড়িয়ে একটি আধুনিক ও অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র গঠনের প্রতীক।
সম্পূর্ণভাবে সিরীয় শিল্পীদের দ্বারা নির্মিত এই নতুন প্রতীক, যার ডিজাইনে নেতৃত্ব দেন খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী খালেদ আল-আসালি, একটি বৃহত্তর জাতীয় ব্র্যান্ডিং প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দু। এই উদ্যোগের লক্ষ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিরিয়ার ভাবমূর্তি পুনর্গঠন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আসআদ আল-শায়বানি বলেন, এটি কেবল একটি রিব্র্যান্ডিং নয়, বরং ‘সাবেক শাসনব্যবস্থার সংস্কৃতির মৃত্যু’।
তিনি বলেন, “এই প্রতীক আমাদের নতুন পথচলার সূচনা—যেখানে রাষ্ট্র জনগণকে রক্ষা করে, অন্তর্ভুক্ত করে এবং ক্ষমতায়িত করে।”
নতুন এই রাষ্ট্রীয় প্রতীক সিরিয়ার সামগ্রিক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিবর্তনের অংশ। দেশটি এখন বৈশ্বিক মঞ্চে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে—একটি বৈধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনগণের অংশগ্রহণভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয়ে।