এপ্রিল ৪, ২০২২, ০৮:১১ পিএম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানের সাবেক প্রথান বিচারপতি গুলজার আহমেদের নাম প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো চিঠিতে ইমরান লিখেছেন, “আমি সাবেক প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করছি।”
এ বিষয়ে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ফাওয়াদ হোসেন জানিয়েছেন দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর গুলজারের নাম বেঁছে নিয়েছেন ইমরান খান।
এ ব্যাপারে টুইটে ফাওয়াদ হোসেন বলেন, “প্রেসিডেন্টের চিঠির জবাবে, পিটিআইয়ের মূল কমিটির সঙ্গে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সাবেক প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের জন্য বাঁছাই করেছেন।”
কে এই গুলজার আহমেদ?
২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন গুলজার আহমেদ। এর আগে, গুলজার আহমেদ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও সিন্ধু হাইকোর্ট আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ছিলেন।
সেখান থেকে তিনি সিন্ধু হাইকোর্টের বিচারপতি হন এবং তারপরে ১৬ নভেম্বর ২০১১-তে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ পান। আলোড়ন সৃষ্টিকারী পানামা পেপারস মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত যে বেঞ্চ রায় দিয়েছিলেন তার এক বিচারপতি ছিলেন গুলজার আহমেদ। এছাড়া, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এবং পাকিস্তানের জুডিশিয়াল কমিশনের সদস্য পদেও রয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের ২৭তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযোগ পান গুলজার আহমেদ।
গত বছর পাকিস্তান সরকার জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সুপ্রিম কোর্টে তলব করে ভর্ৎসনা করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ। ওই সময় তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০১৪ সালে পেশোয়ারের স্কুলে হত্যাযজ্ঞ চালানো জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটা চলবে না।
প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার (৩ এপ্রিল) ইমরান খানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন। এই দিন থেকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এই সময়টাতে একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করবেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে পরামর্শ করবেন প্রেসিডেন্ট।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কাকে চান? এমন প্রশ্ন রেখে সোমবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরীফের কাছে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নাম চেয়ে চিঠি দেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
চিঠির জবাবে ইমরান খান নাম দিলেও পাকিস্তান মুসলীম লীগ (এন) নেতা শেহবাজ শরীফ সরাসরি জানিয়েছেন, তিনি কারো নাম প্রস্তাব করবেন না।