চলছে রমজান মাস। অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে প্রায় প্রত্যেকেরই খাবারের তালিকা আলাদাই থাকে। সারাদিন ধরে রোজা রাখার পর সবাই অপেক্ষায় থাকে ইফতারের মুখোরচক খাবারের। কিন্তু অনেকেই ভুলে যায় যে এই মুখোরচক খাবার শরীরের জন্য উপকারী নাকি অপকারী।
এদিকে সারাদিন রোজা রাখার কথা চিন্তা করে সেহরিতে অধিক খেয়ে থাকেন। অনেকেই মনে করেন, সারাদিন রোজা রাখার ফলে ওজন কমে যায়। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। বরং রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে একসাথে অতিরিক্ত মুখোরচক খাবার খেতে গিয়ে ওজন বেড়ে যায়। এদিকে যারা নিয়মিত ডায়েট করেন তাদের জন্য রোজার দিনে ডায়েট করতে একটু সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে ওজন না কমে বাড়তে থাকে। তাই রমজান মাসে যেভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করবেন:
ইফতার
১. ইফতারে সবার আগে পানি পান করবেন। খালি পেটে তেলে ভাজা খাবার খেলে এর ফল ভয়াবহ হতে পারে। তাই এক গ্লাস না পারলেও অন্তত আধা গ্লাস পানি পান করে অন্য কিছু খান।
২.ইফতারের সময় আমাদের দেশে পেঁয়াজু বেগুনী থাকবেই। আপনি ২টি পেঁয়াজু বা ২টি বেগুনী অথবা ২টি কাবাব খেতে পারেন। ১টি পেঁয়াজু আর একটি বেগুনী, একটি বেগুনী আর একটি কাবাব এভাবেও মিলিয়ে খেতে পারেন। খেয়াল রাখবেন যেন এ ধরনের খাবার ২টির বেশি না খান। কারণ প্রতিটি পেঁয়াজু, বেগুনী বা অন্য যে কোন তেলে ভাজা খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ ৫০ থেকে ৭০ এর মত হতে পারে। একটি টিকিয়া কাবাবে ক্যালরি হলো ৮০ আর চপে ৮৫। যদি সিঙ্গারা খান তাহলে অবশ্যই একটি খাবেন কারণ তাতে ১৪০ ক্যালরি থাকে যা ২টি রুটির সমান! আর সিঙ্গারা খেলে পেঁয়াজু/ বেগুনী/ কাবাব খাবেন না।
৩.হালিম না থাকলে অনেকের কাছে ইফতার অপূর্ণ লাগে। তাই ইফতারে হালিমের উপস্থিতি থাকেই। হালিমে বিভিন্ন রকমের ডাল আর মাংস মেশানো থাকে তাই এতে প্রচুর ক্যালরি থাকে। এক বাটি ভরে হালিম না খেয়ে আধা বাটি হালিম খান। দোকানের হালিম না খেয়ে বাসায় তৈরি করুন। এখন বিভিন্ন হালিম মিক্স মসলা পাওয়া যায় মার্কেটে। তাই বাসায় হালিম তৈরি করাটা এখন সবার কাছেই সহজ।
৪.যদি হালিম না খান তাহলে এক বাটি ছোলা মুড়ি খান কিন্তু যদি আধা বাটি হালিম খান তাহলে আধা বাটি ছোলা মুড়ি খান। কারণ এক কাপ মুড়িতে ৭০ ক্যালরি। আপনি যদি একই সাথে হালিম আর এক বাটি ছোলা মুড়ি খান তাহলে সেটাতে অনেক ক্যালরি হবে।
৫.অতিরিক্ত চিনি দিয়ে শরবত না তৈরি করে ডাবের পানি পান করুন। শরবত যে একদম ছেড়ে দিবেন তা বলছিনা। ৩/৪ দিন পর পর চিনি মেশানো লেবুর শরবত বা অন্য কোন ফলের শরবত খেতে পারেন। তবে বাইরে থেকে রঙ মেশানো শরবত এনে খাবেন না।
৬. এক টুকরো শশা খেতে পারেন।
৭. একটি আপেল/ একটি ছোট কলা/৩/৪ টি লিচু। (প্রায় ৪০ ক্যালরি)
রাতের খাবার
১. একটি রুটি / আধা কাপ ভাত/ অর্ধেক পরোটা (যে কোন একটি খাবেন)।
২. দুই টুকরো মাছ অথবা মাংস। ২টি মাছ আর ২টি মাংসের টুকরো একসাথে খাওয়া যাবেনা।
৩. যে কোন শাক।
৪. ২/৩ চা চামচ টক দই।
সেহরি
অনেকেই সেহরিতে কিছু খান না। কেউবা এক বা দুই কাপ চা খান। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ। আপনি সেহরিতে কম খাবেন কিন্তু নিয়ম মেনে খাবেন। যেমন –
১. আধা কাপ ভাত অথবা একটি রুটি।
২. এক টুকরো মুরগীর মাংস।
৩. সবজি এক কাপ।
৪. টক দই এক কাপ।
যারা টক দই খেতে পারেন না তারা ১ কাপ সর ছাড়া দুধ খেতে পারেন।