সংগৃহীত ছবি
কখনও কি এমন হয়েছে? আপনি হয়তো রাস্তা দিয়ে আপনমনে হাঁটছেন। চারপাশের বাড়িঘর, মানুষজন সবই আপনার অচেনা। হঠাৎ করে কোনো বাড়ি, মানুষ বা অন্য কিছু দেখে আপনার মনে হলো আপনি এটি আগে দেখেছেন। খুব চেনা চেনা লাগছে মানুষ বা জিনিসটি। অথচ, আপনি সত্যিই তা আগে কখনো দেখেন নি। বিজ্ঞানের ভাষায়, আমাদের হঠাৎ এই প্রতিক্রিয়ার নাম হলো ‘দেজা ভ্যু’(Deja Vu)।
সহজ ভাষায়, দেজা ভ্যু হচ্ছে কোন কিছুকে প্রথমবার দেখেই পরিচিত বলে মনে হওয়া। যদিও সেটি আমাদের পরিচিত হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। আমাদের সবার সাথেই কম-বেশি এই বিষয়টি ঘটে থাকে।
বিজ্ঞানীদের মতে, ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষের জীবনে এমন অনুভূতি হয়ে থাকে। দেজা ভ্যুর সঙ্গে ডোপামিন লেভেলের একটি যোগসূত্র থাকতে পারে। পাশাপাশি মস্তিস্কের কোষের মিস ফায়ারিংয়ের কারণেও দেজা ভ্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেজা ভ্যু বিষয়টি নিয়ে অনেক গবেষকই কাজ করেছেন তবে নির্দিষ্ট করে কেউ ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তবে স্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা থাকুক বা না থাকুক সাহিত্য ও সিনেমায় এ বিষয়টি ভীষণ প্রিয়।
২০০৬ সালে দেজা ভ্যু নামেই একটা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল হলিউডে। সেই সিনেমায় একজন ভয়ংকর অপরাধীকে ধরতে দেজা ভ্যু টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া হ্যারি পটার, টোয়াইলাইট ও গেম অব থ্রোনস সিরিজের চলচ্চিত্রে দেজা ভ্যুর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। দেজা ভ্যু ব্যবহৃত হয়েছে অনেক কবিতা ও সাহিত্যেও। রহস্যময় বলেই শিল্পী-সাহিত্যিকদের কাছে বিষয়টি এত সমাদৃত।
দেজা ভ্যু কি কোনো মানসিক সমস্যা?
হ্যালুসিনেশন জাতীয় অন্যান্য উপসর্গের সাথে কেউ যদি বারবার দীর্ঘ সময়ের জন্য এই ধরনের পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেন তবে সেক্ষেত্রে তা ব্যক্তির ‘মানসিক বা স্নায়বিক অসুস্থতার লক্ষণ’ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে গবেষকেরা দেজা ভ্যুকে দুশ্চিন্তা, মানসিক ভীতি, সিজোফ্রেনিয়ার মতো বিভিন্ন মানসিক জটিলতার সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করলেও তাঁদের এই পারস্পরিক সম্পর্কের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অতীত থেকে এখন পর্যন্ত অনেকেই তাদের গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে নানা রকম ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বিশ্লেষণ সাপেক্ষে দেজা ভ্যু হওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় ‘প্রভাবক’ হিসেবে উঠে আসে। এগুলো হলো- স্বপ্নের প্রভাব, অতীত স্মৃতির প্রভাব এবং মস্তিষ্কের প্রভাব।