স্ট্রেস হোক বা পার্টি বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, অনেকেই অনেক সময় মদ্যপান করে থাকেন। মদ্যপানের সময়ে স্ন্যাকস খেতে বেশিরভাগ লোকই ভীষণ পছন্দ করেন। স্ন্যাকস জাতীয় খাবার শরীরের ক্ষতি করে। তবে ভুলেও মদ্যপানের সময় কিছু খাবার কখনোই খাবেন না। তাহলে সর্বনাশ, এতে পেটের নানা ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে।
কাজুবাদাম: মদের সাথে বেশিরভাগ মানুষ চাখনা হিসেবে কাজুবাদাম খান। তবে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের সঙ্গে কাজু খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
মিষ্টি জাতীয় খাবার: মদ্যপানের পর মিষ্টি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এতে মদের নেশা দ্বিগুণ হয়। এমনকি বমিও হতে পারে এতে!
দুধ বা ডেইরি জাতীয় খাবার: মদ্যপানের পর দুধ বা দই খেলে হজম ক্ষমতায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মদের সাথে দুধ বা দই খাওয়া বিষের সমান! অ্যালকোহলের সঙ্গে মাখনে ভাজা শুকনো ফল খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। এ জিনিসও বিপজ্জনক।
চিনাবাদাম: কাজুবাদামের মতোই অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের সঙ্গে চিনাবাদাম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এতে কোলেস্টেরল থাকে, যা খিদে কমিয়ে দেয়।
মধু: অ্যালকোহলের সাথে মধু খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এতে অ্যাসিডিটি ও বমির মতো সমস্যা হতে পারে।
ডাল: ডালে এমনিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। ডাল হজম হতে দেরি হয়ে বলেই বেশিক্ষণ পেট ভরা থাকে। তাই মদ আর ডাল দেওয়া যে কোনও খাবার একসঙ্গে খেলে দুইয়ে মিলে হজম হতে সমস্যা হবে। তাতেই পেটের গোলমাল দেখা দেবে।
চকলেট এবং ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো গ্যাসের সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বেশিরভাগই যারা মদ্যপান করতে পছন্দ করেন তারা মদের সাথে কোক মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন। মদ এবং কোকের একটি নির্দিষ্ট রেশিও করে অনেকেই ককটেইল বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন। তবে এটাও জেনে রাখা উচিত যে কোকের মধ্যেও গ্যাস থাকে যার কারণে মদ্যপানের সাথে কোক মিশিয়ে খেলে গ্যাসজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং চিজি নাচোস এড়িয়ে চলুন কারণ এতে সোডিয়াম বেশি থাকে যা আমাদের লিভারের জন্য খারাপ। পাউরুটিও খাওয়া চলবে না। যে সব খাবারে বেশি মাত্রায় নুন রয়েছে সেগুলি এড়িয়ে যেতে হবে। লিভার মদ আর পাউরুটি একসঙ্গে ভাঙতে পারবে না। তার উপর শরীরে ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
চলুন এখন জেনে নেই মদের সাথে বা মদ্যপানের আগে কোন কোন খাবার খাওয়া যেতে পারে-
খালি পেটে কখনই মদ খাওয়া উচিত নয়। অ্যালকোহল শরীরকে ডিহাইড্রেট করে দেয়। তার উপর খালি পেটে মদ খান কিংবা চাকনা হিসেবে মশলাদার খাবার রাখেন, তখন শরীর খারাপ হবেই।
ডিম: ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন থাকে। যদি মদ্যপানের আগে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যায় তাহলে হজম করতে পাকস্থলি খানিক সময় নেয়। চেষ্টা করবেন সবসময় রাতের খাওয়া হালকা করে সেরে নিয়ে তারপর অ্যালকোহল নিয়ে বসতে। তবে ওমলেট, স্যালাদ বা ভুজিয়া যে কোনও ভাবে ডিমের কিছু খেলে শরীরের জন্য ভালো।
ওটস: মদ্যপানের আগে ওটস খেতে পারেন। মদ শরীরের জন্য যতটা ক্ষতিকারক, ওটস ততটাই উপকারী। এই খাবারের মধ্যে প্রোটিন, ফাইবার সহ বিভিন্ন পুষ্টি রয়েছে। মদ্যপানের আগে ওটস খেলে লিভার কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এছাড়াও মদ্যপান করার আগে খাওয়া যেতে পারে কলা। কলায় থাকা শর্করা শরীরে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে। এতে হ্যাংওভার সহজেই এড়ানো যায়। মদ্যপানের আগে আপনি মাছও খেতে পারেন। ফ্যাটি ফিশের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। পাশাপাশি এতে প্রোটিন রয়েছে, যা অ্যালকোহল শোষণের প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
এছাড়াও হ্যাংওভার কাটানোর জন্য লেবুর কোনো জুড়ি নেই। মদের গ্লাসের মধ্যে এক টুকরো লেবুর রস চিপে দিলে সহজে নেশা হয় না বা মদ পান করার পর লেবুর রস খেয়ে নিলে নেশাও কেটে যায়।