বয়স কমিয়ে অমরত্বের ছোঁয়া দেয় যে প্রাণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২, ০৫:০১ পিএম

বয়স কমিয়ে অমরত্বের ছোঁয়া দেয় যে প্রাণী

ভাবুন তো আপনি আর আপনার দাদু এক সাথে রাতে ঘুমালেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন আপনার পাশে আপনারই বয়সী একজন শুয়ে আছেন। খুব ভালো করে চেহারা খেয়াল করে দেখলেন চেহারা আপনার দাদুর ছেলে বেলার ছবিতে যে দেখেছেন দেখতে অনেকটাই তেমন। অনেকটা নয় বরং পুরোটাই তো আপনার দাদু।

অমরত্বের জন্যইতো মানুষ বার বার অসাধ্য সাধন করে চলেছে। তবে মানুষ মরণশীল। জন্মালে মরতে হবে-এমনটাই নিয়ম। মানুষ অমর হতে না পারলেও একটা ছোট্ট প্রাণী কিন্তু প্রায় অমরত্ব লাভ করেছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। আর এই ক্ষুদে প্রাণীটার নাম জেলেফিস।

https://www.youtube.com/watch?v=vBNUupjbNEw

খুব সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমনই এক ধরণের জেলিফিশের সন্ধান পেয়েছেন। টুরিটোপসিস ডোহরনি প্রজাতির এই  জেলিফিশের বার্ধক্যকে বিপরীতমুখী করার এক অসাধারন ক্ষমতা রয়েছে এবং একই সাথে এরা যতদিন চায় ততদিন বেঁচে থাকতে পারে। তাই অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন একে অমরত্বের শ্রেণিতে রাখা যেতেই পারে।

স্পেনের ওভিডো ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের একদল বিজ্ঞানী এই অমর জেলিফিশের বয়সের রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছেন। এই জেলিফিশের প্রাপ্তবয়স্ক জীবন থেকে লার্ভা পর্যায়ে ফিরে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যদিও রোগে ভুগে এই প্রজাতির জেলিফিশের মৃত্যু হতেই পারে।

গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট এই জেলিফিশের ডিএনএ খণ্ডগুলি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। একটি নিখুঁত জেলিফিশের সঙ্গে তুলনা করে জিনোম সিকোয়েন্স এবং ডিএনএ-র সঠিক অংশটিকে বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হন তাঁরা। আর তারা জানতে পারেন আসলে সেটি একটি বার্ধক্যজনিত জেলিফিশ।

জেলিফিশটির এই ক্ষমতা মেটাজোয়ান নামেও পরিচিত, যার সাহায্যে নিজেকে একটি অনেক ছোট সংস্করণে রূপান্তর করা সম্ভব।প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল আকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানা যায় , “Turitopsis Dohrni” হল একমাত্র বহুকোষী প্রাণী যা প্রজননের পরে বারবার পুনরুজ্জীবিত হতে সক্ষম। এরা জৈবিক অমরত্বের ইঙ্গিত দেয় এবং বার্ধক্য সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে।”

বিজ্ঞানীরা এর প্রতিলিপি করন, ডিএনএ মেরামত, টেলোমের রক্ষণাবেক্ষণ, রেডক্স পরিবেশ,আন্তঃকোষীয় যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত জিনের রূপ এবং সম্প্রসারণ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা খুঁজে প্যেছেন মানুষের মতো ডিএনএ-র অংশগুলিও।

এই আবিস্কার হয়তো অদুর ভবিষ্যতে মানুষেকেও বার্ধক্য বিপরীতমুখী করার সক্ষমতা দেবে। সেটা সম্ভব  না হলেও নিশ্চয়ই এমন অনেক রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। 

Link copied!