বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আসামি প্রায় ২৬ হাজার নেতাকর্মী

অরিন সুলতানা

অক্টোবর ২৩, ২০২৩, ০২:০২ এএম

বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আসামি প্রায় ২৬ হাজার নেতাকর্মী

ফাইল ছবি

সমাবেশ ও কর্মসূচির আগে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তথ্যনুযায়ী গত ১৮ অক্টোবর বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রায় ৪৬০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ১২ হাজার ৭৩০ জনকে আসামি করে মামলা দেয়া হয় ৪৭টি। ২৮ জুলাই থেকে এখন বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আসামি করা হয়েছে ২৫ হাজার ৯২০ নেতাকর্মীকে। মামলা হয়েছে ৩৯৩টি। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ২৮১৫ জন নেতাকর্মী।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে গত পরশু তাঁর গুলশানস্থ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এছাড়াও জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে ঢাকার শেওড়াপাড়া থেকে এবং স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুজ্জামান শিমুলকে মালিবাগ থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। 

কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. মহিউদ্দীন ও দিনাজপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউর রহমান রেজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান ও প্রচার সম্পাদক মঈনকে ঢাকার কাকরইলস্থ হোটেল মেরিনা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ঢাকার কাকরাইলস্থ কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে থেকে গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আশরাফ নেওয়াজ চৌধুরী শাওন, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন মুফাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ভোলা জেলা যুবদলের সভাপতি মো. জামাল উদ্দীন লিটনকে পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও ভোলা সদর উপজেলাধীন ভেদুরিয়া ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো. খলিল, মো. মঞ্জু, মো. জাকির, মামুন, আজাদ ও মো. সবুজকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ। 

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৪১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক নজিবুল হক, ৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক মো. লিটন, শ্যামপুর থানাধীন ৫৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা গোরফান মজুমদার, ধার্মিকপাড়া ইউনিট বিএনপির সহ-সভাপতি মো. সেলিম খান, যাত্রাবাড়ী থানাধীন কোনাপাড়া ইউনিট বিএনপির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নোমান, বংশাল থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান, শাহবাহ থানাধীন ২০নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম, লালবাগ থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান পলাশ, ২৯ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিরব হোসেন সুমন, গেন্ডারিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবুল হোসেন জনি, ৩৪ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সমির হোসেন অপু, মো. রতন চৌধুরী, ওলি খান, মো. রিপন, মো. আরিছ, লালবাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রতন চৌধুরী ও সূত্রাপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা অলি, ঢাকার তোপখানা রোডস্থ হোটেল কর্ণফুলি থেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলাধীন আনোয়ারা উপজেলা যুবদল নেতা- রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, মো. সোহেল, মো. তাজ, নূর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এছাড়া কদমতলী থানা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জহুরুল ইসলাম, সদস্য মো. হিরোন, ৩৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক তোফাজ্জল হক ডালিম, বিএনপি নেতা জাবেদ হোসেন বাবু, মো. রাজ্জাক আলী, মো. সালাউদ্দীন ও জামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

এছাড়াও গতকাল সমাবেশ শেষ করে যাওয়ার পথে কদমতলী থানাধীন ৬০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, বিএনপি নেতা দিদার মহসিন, খোরশেদ আলম, যাত্রাবাড়ী থানাধীন ৬৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. লিয়ন, ওয়ারী থানাধীন ৪১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আলাল, মোসলেম উদ্দিন, কামরাঙ্গীচর থানা বিএনপি নেতা মো. হাসান, মো. জিয়া, মো. বাবলা, মো. মনির হোসেন, হাজারীবাগ থানার মো. ইকবাল, ওয়ারী থানা বিএনপি নেতা মো. মোসলেম উদ্দীন, আলাল, শাজাহান ও বংশাল থানাধীন ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি ।

ঢাকা মহানগর উত্তরের ১০০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল উদ্দীন, ৩৫ নং ওয়ার্ড রেলগেট ইউনিট বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তারা মিয়া, ৪৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান দুলাল, উত্তরখান বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিমুল ইসলাম নাছিম, সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী, উত্তর খান বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিমুল ইসলাম নাছিম, সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী, উত্তরখান পূর্ব থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন, দক্ষিণখান থানা যুবদলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানা যুবদল নেতা জাকির হোসেন, ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফাহিম খান শাওন, ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মুরাদ কাদেরী, সদস্য হিরা, শেরেবাংলা নগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, উত্তরা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ, রূপনগর থানাধীন ৬ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হারুন অর রশিদ, ভাষানটেক থানাধীন ৯৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. আজিজ, হাতিরঝিল থানাধীন ২২ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম, মোহাম্মদপুর থানাধীন ৩৩ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এস এম তাহের, ভাটারা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মোঃ শিপন, তেজগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজাদ, বনানী থানাধীন ২০ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মিলন ও বাতেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার হাদিরা ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকার জনসমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে আসলে ঢাকার কাকরাইল মোড় থেকে ভোর সাড়ে ৪টায় গোপালপুর থানাধীন হাদিরা ইউনিয়ন কৃষকদলের আহ্বায়ক মনসুর তালুকদার, বিএনপি নেতা ডা. মঈন, লিয়াকত ভূঁইয়া, আনোয়ার হোসেন, ওবায়দুল্লাহ, বাসেত, হায়দার, খলিল, স্বপনসহ মোট ৫১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ধনবাড়ি উপজেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন আলম, উপজেলা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দুলাল, উপজেলা বিএনপির সদস্য হাবিবুর রহমানসহ মোট ৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এছাড়াও টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার দেওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ভূঁইয়া জামাল, ধলাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. আমিনুল ইসলাম, দেওপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত খান, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হারেজ ও আব্দুর রশিদ খানসহ মোট ২৬ জন নেতাকর্মী ঢাকায় সমাবেশে আসার পথে ঢাকার আশুলিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে পরবর্তীতে তাদের টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানায় মামলা দিয়ে হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া গাজীপুর মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম ব্যাপারীকে তেজগাঁও থানা পুলিশ, বরিশাল দক্ষিণ জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শফিউল আলম সফরুলকে ঢাকার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

যশোর জেলার সদর উপজেলার চাচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২২ জন নেতাকর্মীকে ঢাকাগামী বাস থেকে নামিয়ে আটক করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। 

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জেনারুল শেখ এবং ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. সুরুজ্জামান সুরুজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঝালকাঠি জেলাধীন নলছিটি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তৌহিদ আলম মান্না, সদস্য সচিব সাইদুল কবির রানা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পারভেজ, জাফর, বাদল, তারেক, জাহিদ ও শাকিলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 এছাড়াও ঝালকাঠি জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম, মকসুদপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ হাসান, রাজারহাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুশু চৌধুরী, যুবদল নেতা রানা চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এভাবে ঢাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশ থেকে মোট ২৮১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তাদের অবিলম্বে নিশর্ত মুক্তির দাবি জানান বিএনপির এই মুখপাত্র।

Link copied!