পাওনা ১১ লাখ টাকা শোধ করতে সামিয়া রহমানকে চিঠি দিল ঢাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১০, ২০২২, ১১:৫২ পিএম

পাওনা ১১ লাখ টাকা শোধ করতে সামিয়া রহমানকে চিঠি দিল ঢাবি

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানের কাছে পাওনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ২১৬ টাকা দাবি করে তা শোধ করার জন্য চিঠি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  প্রশাসন।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এমন দাবি করা হয়েছে। তবে এ চিঠিকে বানোয়াট আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করতে এমন চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন সামিয়া রহমান।

গত ৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে তাকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়,  ‘প্রিয় মহোদয়া, আপনার ৩১-০৩-২০২২ তারিখের পরের বরাতে এবং ২৬-০৪-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জানানো যাচ্ছে যে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আপনাকে দেনা-পাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে ১৫-১১-২০২১ তারিখ হতে বিধি মোতাবেক আগাম অবসর (আর্লি রিটায়ারমেন্ট) গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তার দেনা-পাওনার একটি হিসাব উল্লেখ করে বলা হয়, ‘হিসাব পরিচালকের দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার দেনা-পাওনা: মূল বেতন ৬,০৭,৫৭৪ টাকা, বাড়ি ভাড়া ৩, ০৩, ৭৮৭ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১২,৮০০ টাকা, গবেষণা ভাতা ৪২,৬৬৭ টাকা, অফ ক্যাম্পাস ভাড়া ৮,৫৩৩ টাকা, বৈশাখী ভাতা ১৪,২৪০ টাকা, উৎসব ভাতা ১,৪২, ৪০০ টাকা, মোবাইল ভাতা ৯,৬০০ টাকা। মোট ১১ লাখ ৪১, হাজার ৬০১ টাকা (এগার লাখ একচল্লিশ হাজার ছয় শত এক টাকা মাত্র)।আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ড-এ সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬,৫৮,২১৬ টাকা (ষোল লাখ আটান্ন হাজার দুইশত ষোল টাকা)।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬,৫৮,২১৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আপনার দেনা ১১,৪১,৬০১ টাকা পরিশোধ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এটা একটা বানোয়াট চিঠি: সামিয়া রহমান

এদিকে, তাকে পাঠানো চিঠি বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছেন সামিয়া রহমান। বুধবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো টাকা পায় না। বরং অর্জিত ছুটিতে থাকায় আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে টাকা পাই। মামলায় হেরে আমাকে টাকা বুঝিয়ে না দিতে এবং প্রতিশোধ নিতে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর এই চিঠিতে ৩ আগস্টের স্বাক্ষর দেওয়া আছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মঙ্গলবার আমাকে মেইল পাঠানো হয়েছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, এটা একটা বানোয়াট চিঠি।”

ঢাবির এই শিক্ষক আরও বলেন, “আমাকে হেনস্তা করার জন্য, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন তড়িঘড়ি করে এমন চিঠি বানিয়েছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। ছুটির কাগজপত্র আমার কাছে আছে, ছুটিতে থাকলে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় টাকা পাবে? আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি। মামলা করব, আর এটাতেও বিশ্ববিদ্যালয় হারবে।”

Link copied!