ব্যাংকের এমডিদের অযাচিত বেতন-ভাতায় লাগাম টানার চিন্তা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১০, ২০২২, ০৩:৪৮ এএম

ব্যাংকের এমডিদের অযাচিত বেতন-ভাতায় লাগাম টানার চিন্তা

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হলো ব্যাংকগুলোর শীর্ষপদ। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তিনিই সাধারনত সর্বোচ্চ ব্যক্তি। তাঁর নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় ব্যাংক। তাই তাঁর বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধাও থাকে সবার থেকে বেশি। তবে অযাচিত বেতন-ভাতা রোধ ও ব্যাংক সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধায় লাগাম টানতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে পরিচালক ও অন্যান্য বৈঠক সংক্রান্ত ফি-তেও আনা হবে সংস্কার। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী সপ্তাহে সকল ব্যাংককে এ সংক্রান্ত চিঠি দেবে। 

ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতন পান ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি। আর সবচেয়ে কম বেতন পান রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের এমডি। বড় ব্যাংকের এমডিদের বেতনও বড়। স্বাভাবিক নিয়মে এটিই হওয়ার কথা। কিন্তু বড় ব্যাংকের এমডির বেতন বড় নয়, বরং কম। ছোট ব্যাংকের এমডিরই বেতন বড়। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বড়। এসব বড় ব্যাংকের এমডিদের বেতন কম। আবার বেসরকারি খাতের ছোট ব্যাংকগুলোর এমডিদের বেতন অনেক বেশি।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বেতনের এমডি রয়েছেন বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংকে। ব্যাংকটি গত বছর এমডির পেছনে খরচ করেছে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতন পান ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি। গত বছর তিনি পেয়েছেন ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। তার আগের বছর পেয়েছিলেন ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। প্রতি মাসে সাড়ে ১২ লাখ টাকার বেশি বেতন পান মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও দি সিটি ব্যাংকের এমডি।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বেতন পান সরকারি খাতের রূপালী ব্যাংকের এমডি। এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতেই ব্যাংকগুলোর এমডিদের বেতন নিয়ে আলোচনা করছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু তখন বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কমানোর বিষয়ে কোন কথা হয়নি। তবে সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর ব্যয় কমানোর পাশাপাশি আর্থিক সংকট রোধে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সপ্তাহে সকল ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ব্যাংকারদের সুযোগ সুবিধা আগে থেকেই কমানো হয়েছে। তাই এখন নতুন করে কমানোটা কষ্টকর। এদিকে অনেক ব্যাংকের এমডির চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ থাকে। নিয়োগের সময়ই তাঁদের বেতন ভাতা উল্লেখ থাকে। তাই এই নিয়ে নতুন করে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

গত বছরই করোনা মহামারী পরিস্থিতির কারণে ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকটির উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডার পরিচালকরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত পর্ষদ সভা এবং পর্ষদের বিভিন্ন কমিটির সভায় অংশ নেওয়ার জন্য কোনো সম্মানী নেবেন না। তবে ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালকরা সম্মানী পাবেন।

পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ ও বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ, নতুন শাখা না খোলা, স্থায়ী কোনো সম্পদ না কেনা এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সিএসআর ও শিক্ষাবৃত্তি ছাড়া সব ধরনের সিএসআর বন্ধ রাখাসহ মোট ব্যয় সংকোচনের জন্য মোট ১৩টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Link copied!