যথেষ্ট খাদ্য-শস্য মজুদ আছে, ‘প্যানিক বায়িং’ করবেন না: মূখ্য সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ১৩, ২০২৩, ০৪:৩৫ এএম

যথেষ্ট খাদ্য-শস্য মজুদ আছে, ‘প্যানিক বায়িং’ করবেন না: মূখ্য সচিব

আসছে রমজানে বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি খাদ্য-শস্য ও নিত্য পণ্যের মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। তাই জনসাধারণকে অহেতুক উদ্বিগ্ন হয়ে এক সঙ্গে অনেক বেশি পণ্য না কিনতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

রমজানে মানুষের কষ্ট লাগবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে রবিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব বলেন, “এবার রোজার প্রস্তুতি আমরা যথাযথ ভাবে নিতে পেরেছি। আমাদের পর‌্যাপ্ত খাদ্য-শস্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে আছে। আমরা শুধু সবাইকে বলবো ‘প্যানিক বায়িং’যেন কেউ না করে।”

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি খাদ্য-শস্য মজুদ আছে জানিয়ে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, “বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছি বিগত যেকোন বছরের চেয়ে এ বছর সরকারের যে খাদ্য মজুদ তার পরিমান অনেক বেশি। অর্থাৎ রোজায় আমাদের অনেক বেশি খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় স্বস্তির বিষয় এবং এ মজুদ বিগত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি।”

অবৈধ মজুদ এবং বাজারে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব বলেন, “যারা রোজার সময় মজুদ করার চেষ্টা করবো, মানুষের দুর্ভোগ করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাতে মজুদ করতে না পারে কড়া নজরদারী থাকবে।”

রোজায় পণ্যমূল্য বাড়বে না জানিয়ে তিনি বলেন, “এবার আমাদের পণ্য মূল্য বাড়ার কোন কারণ নাই। মজুদ আমাদের যথেষ্ট আছে। বিগত রোজার চেয়ে বেশি আছে।”

চিনি-তেলের ওপর ডিউটি কমানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আরও বলেন, “ এ পণ্যগুলো আমাদের বাজারে ঢুকে গেছে। সরকারও যথেষ্ট পরিমাণ নিত্যপণ্য সরবরাহ করে ফেলেছে। মোবাইল কোর্ট আমরা চালু রাখবো। মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশনা দিয়েছি।”

কম আয়ের মানুষের জন্য সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ওএমএস, টিসিবি আছে রোজা ও ঈদকে ঘিরে দুই কিস্তিতে এবার টিসিবির খাদ্য পণ্য সরবরাহ হবে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা এবং পেঁয়াজ, ঢাকায় খেজুর। প্রতিটি নিত্য পণ্য আমরা দুই বার করে এক কোটি মানুষকে দেবো। সে হিসেবে প্রতিবারে ৫ কোটি লোক উপকৃত হবে। অর্থাৎ দুইবারে ১০ কোটি মানুষ কিন্তু টিসিবির খাদ্যপণ্য সহজে কিনতে পারবে।

তিনি বলেন, “খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা হিসেবে ৩৫ লাখ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে থাকি। সমগ্র দেশে কিন্তু আমাদের খাদ্য শস্য সরবরাহ অনেকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে।”

রমজানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বিষয়ে তিনি বলেন, “বিদ্যুতের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। সেহরি এবং ইফতারির সময় যাতে কোন বিদ্যুতের ব্যাগাত যাতে না ঘটে সে জন্য আমরা বলে দিয়েছি। পানি সরবরাহের বিষয়টিও দেখেছি।”

 

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), সেতু বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব,খাদ্য অধিদপ্তর, বিএসটিআই, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ব্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআরটিসি, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!