স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৭, ২০২৩, ০২:২১ এএম

স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে: তথ্যমন্ত্রী

সাধারণ মানুষের জন্য স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণ অনেক সহজ, সুদও এনজিও’র তুলনায় অনেক কম এবং এটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার নিজ উপজেলা রাঙ্গুনিয়ায় এবি ব্যাংকের স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্যে এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ একথা বলেন। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর থেকে ওই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন তিনি।

স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণের উদ্যোগের প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ অর্থনীতি এবং আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। বাংলাদেশে এখনও ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামেই বসবাস করে। জিডিপিতে যদিওবা শিল্পখাতের অবদান কৃষিকে ছাড়িয়ে গেছে তবুও এখনও দেশের ৭০ ভাগ কিম্বা তার চেয়েও বেশি মানুষ নানাভাবে কৃষির এবং কৃষি অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য স্মার্ট কার্ডে কৃষি ঋণদান অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ।”

ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “আজ (সোমবার) থেকে ২০-২৫ বছর আগে শুধুমাত্র শহর অঞ্চলে কিম্বা নগর কেন্দ্রগুলোতে ব্যাংকের শাখা থাকতো। আমাদের সরকার নিয়ম করে দিয়েছে এখন নতুন ব্যাংকের শাখা খোলার ক্ষেত্রে সম্ভবত অর্ধেক নগরে আর অর্ধেক নগরের বাইরে করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সেভাবেই অনুমোদন দিয়ে থাকে, যাতে করে গ্রামের মানুষ ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আসে। আমি এবি ব্যাংকে ধন্যবাদ জানাই কয়েকদিন আগে এবি ব্যাংক রাঙ্গুনিয়ায় একটি উপশাখা উদ্বোধন করেছে এবং সেই শাখার মাধ্যমেই আজকে কৃষি ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে “

নিজ জনপদের বর্ণনায় হাছান মাহমুদ বলেন, “রাঙ্গুনিয়া একটি বর্ধিঞ্চু জনপদ। আমাদের এ উপজেলায় এক লক্ষের কাছাকাছি মানুষ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং আমেরিকা, মালয়েশিয়ায় বসবাস করে। তারা বিদেশে কাজ করে ও নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠায়। এই রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রেও রাঙ্গুনিয়ার ব্যাংকের শাখাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে বিভিন্ন এনজিও’র পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হতো এবং তারা মানুষের ওপর চাপ প্রয়োগ করতো, এখনো যে করে না তা নয়। তারা এমন চাপ প্রয়োগ করতো, দেখা যেতো ঋণের তিনগুণ চারগুণ দিয়েও ঋণ মুক্ত হয় না, এ রকম ঘটনা ঘটেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সেই ঋণ শোধ করতে না পারার কারণে সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় অনেকে আত্মহত্যা করেছে এমনও ঘটনা ঘটেছে। সেই ক্ষেত্রে তফসিলী ব্যাংক বিশেষ করে এবি ব্যাংকসহ যে সমস্ত ব্যাংক এখন ঋণ দিচ্ছে তা কৃষকের জন্য,সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সহজ, সুদও এনজিও’র তুলনায় অনেক কম। এটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।”

এ সময় ঋণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের সরকার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে জামানতবিহীন ঋণও প্রদান করে আসছে। এতে করেও যুবকেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঋণের সুবিধাটা সেটি আমাদের যুবকেরা পুরোপুরি জানে না। সেটিও তাদের জানানো প্রয়োজন। আর এবি ব্যাংককে অনুরোধ জানাবো তাদের কৃষি ঋণসহ আরো নানা ধরণের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প নিয়ে কৃষকদের জন্য কর্মশালা করার জন্য। আসুন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের দেশ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাক, ৪১ সাল নাগাদ সত্যিকার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে আমরা পরিণত হই।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সজল কুমার তালুকদার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতি প্রমুখ রাঙ্গুনিয়া প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।  

Link copied!