‘কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে সহায়তা করছে সরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ২০, ২০২১, ০৪:৩৮ এএম

‘কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে সহায়তা করছে সরকার’

দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করাসহ কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশে কৃষি উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হতে পারে, তার জন্য যথাযথ মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সরকার অন্যান্য সহযোগিতাও করে যাচ্ছে।’

এছাড়া কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্য পান, তার জন্য আমরা যথাযথ দাম নির্দিষ্ট করছি এবং কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছি।’

সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সহযোগী এ সংগঠনটির ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ওই ভাষণ সম্প্রচার করা হয়।

প্রায় পৌনে ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।

সেসময় প্রধানমন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া বিভিন্ন সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্গাচাষিরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পান, আমরা কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের সেই ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা আজ আমরা ১২ টাকায় নামিয়ে এনেছি। গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বীজ উৎপাদন করছি এবং সেই বীজ আমরা সরবরাহ করছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা সেই সঙ্গে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, যেটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল, আমরা সেই লক্ষ্য কার্যকর করে দিচ্ছি এবং সেখানে আমরা শতকরা ৭০ ভাগের ওপরে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমরা কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি, যাতে আমাদের কৃষকরা আরও অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নতমানের বীজ সরবরাহ, প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা সেচ কাজে কৃষক যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি। কৃষকের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয়, তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’ কৃষকদের জন্য বর্তমানে সেচ কাজে সোলার-প্যানেল ব্যবহারেও সরকার সহায়তা করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। কৃষক একটা মোবাইল ফোন ধরে ছবি তুলে তার ফসলের কী অবস্থা, মাটির কী অবস্থা বা মাটি পরীক্ষা করা এবং কী ধরনের সার ব্যবহার করবেন, কতটুকু ব্যবহার করবেন, বা কীটনাশক ব্যবহার করবেন কিনা বা কতটুকু করবেন, সেই ধরনের কৃষি তথ্য যাতে তারা পেতে পারেন, সে ধরনের তথ্যকেন্দ্র সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং আমরা সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবারেও যেমন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, তারাও সে ধরনের সহযোগিতা পাবেন। তার জন্য একটা থোক বরাদ্দ আমরা রেখে দিচ্ছি।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশের কৃষিটাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি । কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৃষি অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা শিল্পের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছি। কারণ, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা এবং দেশে-বিদেশে পণ্য যেন আমরা রফতানি করতে পারি, তার ব্যবস্থা করে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দিয়ে যাচ্ছি।’

Link copied!