সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যাপারে সেনাপ্রধান যে সময়সীমা দিয়েছেন, তাতে তিনি সন্তুষ্ট, যদিও তারা আরও আগে নির্বাচন প্রত্যাশা করেছিলেন। একই সঙ্গে জয় সতর্ক করে বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে প্রকৃত সংস্কার ও নির্বাচন সম্ভব নয়।
বুধবার প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা জয় মঙ্গলবার রয়টার্সকে বলেছেন, "এখন অন্তত একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পাওয়া গেছে, যা দেখে আমি খুশি।"
তিনি আরও বলেন, "তবে আমরা আগেও এমন পরিস্থিতি দেখেছি যেখানে একটি অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়।"
মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করার লক্ষ্যে তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দেবেন।
গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন এবং তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার গত আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও আওয়ামী লীগ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি তোলে।
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সার্বিক সংস্কারে কাজ করে যাচ্ছে, তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে এবং "সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হলে এবং ভোটার তালিকা তৈরি হলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।"
ওয়াশিংটন থেকে জয় বলেন, "বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কোনো বৈধ সংস্কার বা নির্বাচন সম্ভব নয়।"
৫ আগস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তার দলের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতা দেশ ছেড়েছেন, আত্মগোপনে আছেন, কিংবা হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
জয় দাবি করেন, হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
রয়টার্স এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনী সংস্কার কমিটির প্রধান বদিউল আলম মজুমদার জানিয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, "নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ হবে কিনা, তা সরকারের ওপর নির্ভর করছে।"
এর অাগে জয় জানিয়েছিলেন, হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে দেশে ফিরে বিচার সম্মুখীন হতে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবার জয় বলেন, "শেখ হাসিনা কবে দেশে ফিরবেন তা তার ওপর নির্ভর করছে। আমি এই মুহূর্তে আমার দলের মানুষদের নিরাপদ রাখতে চাই এবং ড. ইউনূসের সরকারের চালানো নৃশংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চাই।"