শুধু নিজের কথা চিন্তা করছেন, দলের জন্য না: সাকিব

স্পোর্টস ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩, ০৬:৩৪ এএম

শুধু নিজের কথা চিন্তা করছেন, দলের জন্য না: সাকিব

সংগৃহীত ছবি

নানা নাটকীয়তার মাঝে বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ খেলতে এখন ভারতে। এর মাঝে বুধবার রাত ১১টায় বেসরকারি একটি চ্যানেলে প্রচারিত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের একটি সাক্ষাৎকার। সেই সাক্ষাৎকারে উঠে আসে অনেক আলোচনা-সমালোচনা-ব্যক্তিগত মত।

তামিমকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল সেটি সাকিব জানতেন কি না এই প্রশ্নে সাকিব বলেন, ‘আমার সাথে কোন আলোচনাই হয়নি। যদি এটা কেউ বলে থাকে সে নিশ্চয়ই অথরাইজড কেউ। এটা আগে থেকে আলাপ করা হচ্ছিল যেন জানা থাকলে দুই পক্ষের জন্যই ভাল হয়। আর এরকম বলাতে (তামিমকে মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে বলা) খারাপ কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।’

সাকিব আরও বলেন, ‘কেউ এটা বলে থাকলে সে টিমের কথা চিন্তা করেই বলেছে। যে এই কম্বিনেশনটা আমরা দেখি। এমন অনেক কিছুই হয় একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে। ফলে সেটা আগে থেকে আলোচনা হওয়া ভালো। নাকি এমন প্রস্তাবই দেয়া যাবেনা? যে একজনকে (তামিমকে ইঙ্গিত করে)আমি বলবো তুমি যা ইচ্ছা করো। এখানে টিম আগে না ইনডিভিজ্যুয়াল আগে?’

সাকিব বলেন, ‘বিসিবি প্রস্তাব দিয়েছিল দলের ভালোর জন্য। এটাতে খারাপ কী আছে। আপনাকে বলতে যে আমি প্রস্তুত, পারব। তাহলে না আপনি টিমমেট, নইলে কীসের টিমমেট। আপনি নিজের জন্য খেলছেন, নিজের অর্জনের জন্য, নিজের খ্যাতির জন্য, দলের জন্য না।’

বিশ্বকাপে ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকে ব্যাট করার জন্য বিসিবি থেকে প্রস্তাব দেয়া হলে তামিমের উত্তেজিত হওয়ার প্রসঙ্গকে বাচ্চামি উল্লেখ করে বাংলাদেশ অলরাউন্ডার বলেন, ‘রোহিত শর্মার মতো একজন লোক সাত নম্বর থেকে এসে ওপেনিংয়ে খেলছেন। তো ও (তামিম) যদি মাঝে মাঝে তিন-চারে খেলে কিংবা ব্যাট না করে তাহলে কী খুব বেশি প্রবলেম হয়ে যাবে। এটা আমার কাছে মনে হয় বাচ্চামি। বিষয়টা এমন যে আমার ব্যাট আমিই খেলব। আর কেউ খেলতে পারবে না।’

সাকিব যোগ করেন, ‘টিমের প্রয়োজনে যে কারোর যে কোনো পজিশনে খেলতে রাজি থাকা উচিত। টিম ফার্স্ট। আপনি ব্যক্তিগতভাবে কী করলেন, আর দল হারল। তাতে কোনো লাভ নেই তো। ব্যক্তিগত অর্জন দিয়ে আপনি কী করবেন? শুধু নিজের কথা চিন্তা করছেন, দলের জন্য না! মানুষ এই পয়েন্টগুলোই বুঝে না।’

তামিমের দল থেকে বাদ পড়ার পিছনে সাকিবকে অনেকেই দায়ী করছেন। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আমি অন্তত মনে করি, অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে আমি দেখে আসছি একটা প্লেয়ার যে ভালো করছে, দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করছে সেই প্লেয়ারকে বাংলাদেশ কখনো কোনদিনই বাদ দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার তো দায়িত্ব না পুরো টিমটা সিলেক্ট করা। তাহলে তো এশিয়া কাপের একদিন আগে ক্যাপ্টেন অ্যানাউন্স করেই টিম দিয়ে দিতে পারতাম। এটা (কারো দলে থাকা না থাকা) অনেক প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অনেক ফ্যাক্ট চিন্তা করতে হয়, এমন না শুধু মাঠের পারফর্মেন্স। মাঠ, মাঠের বাইরে, ড্রেসিংরুম, টিম মিটিং, এটমস্ফিয়ার অনেক কিছু আসলে চিন্তা করে টিমটা করতে হয়। যদিও এইসবকিছুতে আমি এখন খুবই কম ইনভলভড।’

ড্রেসিংরুমেও তামিম অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেন উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘তামিম প্রায় প্রতি সিরিজের মাঝে বলতেন তিনি ক্যাপ্টেন্সি ছাড়বেন। একপর্যায়ে এক ক্রিকেটার বলেই ফেলেছিলেন, ছাড়লে আগে ছাইড়েন যেন নতুন কেউ এলে সময় পায়। আমি কিন্তু দল গুছায়ে নিতে সময় পাইনি।’

সাকিব আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত এখনো যদি বলি মাশরাফী ভাইকে অধিনায়ক হিসেবে ২৩ এর বিশ্বকাপ খেললে ভালো হতো; সবাই খুশি হয়ে যেত। আমি সাইকোলজিটা (সাধারণ মানুষের) বুঝতে পারি। তারা খুবই সহজ-সরল। এ কারণে তারা আসলে এভাবে চিন্তা করে যে, মাশরাফী ভাই যদি এখনো খেলোয়াড় কিংবা অধিনায়ক হিসেবে আসে বা দলের অংশ হয়, সবকিছু অন্যরকম হয়ে যাবে।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে কবে অবসর নেবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‍‍`আজকের এই পরিস্থিতি থেকে যদি দেখি, ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এটা ওয়ানডে ফরম্যাটের জন্য। আর টি-টোয়েন্টি ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। টেস্টটা আরও আগেই।‍‍` 

Link copied!