কোভিডকালীন বইমেলা নিয়ে যে আশঙ্কা প্রকাশকদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৯:২০ এএম

কোভিডকালীন বইমেলা নিয়ে যে আশঙ্কা প্রকাশকদের

দরোজায় কড়া নাড়ছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। প্রতি বছর এ মাসে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হয়। গোটা মাস গ্রন্থপ্রেমীদের পদচারনায় উৎসবমুখর হয়ে উঠে বাংলা একাডেমিসহ গোটা ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। তবে, করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের বইমেলা আয়োজন করা হয়েছিলো মার্চে, অগোছোলোভাবে। নানা বিধিনিষেধ, নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়া, নির্ধারিত সময়ের আগেই বইমেলা শেষ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে প্রকাশকরা গুণেছিলেন আর্থিক ক্ষতি।

কোভিডকালে এবারের বইমেলার সরেজমিন খোঁজখবর করতে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের এ প্রতিনিধি গিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি প্রকাশনীতে। বইমেলা উপলক্ষ্যে তাদের প্রস্তুতি কেমন, এবার তারা কী কী পরিকল্পনা করছেন— এরকম নানা বিষয় প্রকাশকরা এ প্রতিবেদকের কাছে খোলামেলা তুলে ধরেছেন।

অন্বেষা প্রকাশনী প্রকাশক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বইমেলার মূল আবেদনটা থাকে ফেব্রুয়ারি মাসে। গত বছরের বইমেলা শুরু হয়েছিলো মার্চে, তারপর নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই মেলা শেষ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতিদিন যে সময়সূচি নির্ধারিত ছিলো বইমেলার জন্য, তাও যথেষ্ট ছিলো না। এসব বেশ কিছু কারণে গতবারের বইমেলায় আমরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।

তিনি বলেন, এ বছরের বইমেলায় যেসব বই উঠবে সেগুলোর শুধুমাত্র ছাপার কাজটা বাকি। এবার আমরা প্রত্যাশা করছি, বইমেলা ভালোমতো করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নইলে প্রকাশকদের পক্ষে এবার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।

বেশিরভাগ প্রকাশকই বলেছেন, এ বছরের বইমেলায় যাওয়ার প্রায় সমস্ত প্রস্তুতি তারা সম্পন্ন করে রেখেছেন। অনেকেই কিছু কিছু বইও ছাপিয়ে রেখেছেন। বইমেলার ঘোষণা আসার সাথে সাথে বাকি বইগুলো ছাপাবেন। যদি এখন এসে কোন কারণে বইমেলার ব্যাঘাত ঘটে, তাদের পক্ষে এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা কষ্টদায়ক হবে। 

এ প্রতিবেদক খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানিতে গেলে সেখানে উপস্থিত প্রকাশনীর ম্যানেজার মোহাম্মদ তোতা মিয়া জানান, এ বছর তারা বইমেলায় যাচ্ছেন না।

এমন সিদ্ধান্তের কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, গতবারের বইমেলায় কোভিড-১৯ থাকা স্বত্বেও প্রকাশকদের ক্ষতি পোষানোর কোন ব্যবস্থা বাংলা একাডেমি নেয়নি। এবারের বইমেলার বিষয়েও তারা এখনও সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়ছে, আবারও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে আমরা এ বছর মেলায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এছাড়াও আরও কয়েকজন প্রকাশক সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, এ বছর প্রকাশকদের যাতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য আমরা বইমেলার স্টলের ভাড়া অর্ধেক করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করেছি।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বছরের বইমেলার বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি শুধু এটুকু বলেন, সরকারের কাছ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। সিদ্ধান্ত আসার পর তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি অবহিত করতে পারবেন।

Link copied!