নভেম্বর ১৭, ২০২১, ০৬:১৮ পিএম
খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দেয়া হয়েছে এটাই কি বেশি না? খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দেয়া হয়েছে এটাই যথেষ্ট বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতি করে দেশকে ধ্বংস করেছে, অনেক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এত অমানবিককেও আমরা মানবিকতা দেখিয়েছে। তাই এটা এখন আইনগত ব্যাপার।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসবভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন । গণমাধ্যমকর্মীরা যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে।
খালেদা জিয়ার বিষয়টি বিচার বিভাগের বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আইনের বাইরে গিয়ে সরকারের কিছুই করার নেই। তবে আমার হাতে যা ছিল, তা দিয়ে তাকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করেছি। এখন এটা সম্পূর্ণ বিচার বিভাগের বিষয়।’
এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করে বলেন, আপনাকে যদি কেউ হত্যা করতে চাইতো তকবে আপনি কী তাকে ফুলের মালা দিয়ে বাসায় নিয়ে আসবেন?’
সরকার প্রধান বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুর্নীতি করে দেশকে ধ্বংস করেছে, অনেক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এত অমানবিক কর্মকাণ্ড করা সত্ত্বেও আমরা মানবিকতা দেখিয়েছে। তাই এটা এখন আইনগত ব্যাপার।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ইলেকশন নিয়ে প্রশ্ন করে কীভাবে। জিয়া হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে এসেছে। এরপর তার অন্য নির্বাচনগুলো কি নির্বাচন ছিল? ১৯৮১ সালে নির্বাচনে কি হয়েছিল, তা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলে? ইলেকশন কীভাবে করবে তারা। করতে হলে সাংগঠনিক শক্তি দরকার, তা তো তাদের নাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃণমূলে এমনভাবে উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ তাতে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা গ্রেনেড হামলা, গুপ্ত হত্যা ইত্যাদির মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। বিদেশ থেকে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের নেতারা।তারা ক্ষমতায় এসেছে অস্ত্রের মাধ্যমে।’ ৭৫ পরবর্তী বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
১৯৭৫ সালের পর সংঘটিত বিভিন্ন ক্যুতে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান সরাসরি এগুলোতে জড়িত ছিলেন। তার নির্দেশে প্রহসনের বিচারের জন্য সামরিক আদালত বসানো হয়েছিল।’ কত মানুষ মারা গিয়েছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা বের করা যায়নি বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমানবাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহ কঠোরভাবে দমন করা হয়েছিল। তখন সামরিক আদালতে ফাঁসি দেওয়া হয় ১১ জন অফিসারসহ এক হাজার ৪৫০ বিমান সেনাকে। বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হন আরও চার হাজার সেনা। নিখোঁজ হন অসংখ্য। সামরিক আদালতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা সম্প্রতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় আমার ফুফাত ভাই ফিরোজ কবির চৌধুরী, যিনি ক্যামেরাম্যান ছিলেন, তাকেও হত্যা করা হয়। তাদের হত্যা করে বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। জেলখানায় যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের হয়তো খোঁজ পাব। কিন্তু কত জনকে যে ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়েছে, জানি না। তবে আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজ নেব।’ওই সময় নিহত অনেকের পরিবারের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে জানান।