অক্টোবর ১২, ২০২১, ১২:৫৭ এএম
সম্প্রতি শিশু কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে তথ্য ফাঁস করেছেন ফেসবুকেরই এক সাবেক কর্মকর্তা। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সারা দুনিয়ায়। জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর কঠোর নজর রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারাও।
সে কারণেই কিশোর-কিশোরীদের ক্ষতিকর বিষয়বস্তু (কনটেন্ট) থেকে দূরে রাখতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে ফেসবুক।
রবিবার (১০ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন ফেসবুকের এক কর্মকর্তা।
ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের সহসভাপতি নিক ক্লেগ রয়টার্সকে বলেন, ফেসবুকের অ্যালগরিদমে নিয়ন্ত্রকদের প্রবেশাধিকার থাকতে পারে। এতে ক্ষতিকর বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হবে।
গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল হামলার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করা হয় সরাসরি। সে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট দিয়ে নিজ সমর্থকদের উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো—বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্যই বারবার সামনে আসছিল। জনপ্রিয় কনটেন্ট হিসেবে বারবার ঘুরে আসা এসব কনটেন্টই ট্রাম্প সমর্থকদের আরও উসকে দিচ্ছিল। নিজেদের এই ভূমিকা নিয়ে ওঠা প্রশ্নটির কোনো উত্তর না দিলেও নিক ক্লেগ ঠিকই ফেসবুকের অ্যালগরিদমে নিয়ন্ত্রকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিক বলেন, ‘আমরা ফেসবুকে দ্রুত কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি, যা শিশু-কিশোরদের ক্ষতিকর বিষয় থেকে দূরে রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। চালু করতে যাওয়া এই নতুন ব্যবস্থা তাদের সামনে থেকে ক্ষতিকর বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলবে। তা ছাড়া কিশোর-কিশোরীদের ইনস্টাগ্রাম থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য চালু করতে যাচ্ছি “টেক আ ব্রেক” অপশন।’
গত সপ্তাহে ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইনস্টাগ্রামের প্রভাব ভয়াবহ। এই তথ্য জানার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মার্কিন সিনেট সদস্যদের তোপের মুখে পড়ে ফেসবুক। তাই কিশোর-কিশোরীদের রক্ষায় ফেসবুকের মতো অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর আরও কঠোর নীতিমালা আরোপের দাবি জানিয়েছেন সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির অ্যান্টি ট্রাস্ট সাব কমিটির সভাপতি ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার।
এ বিষয়ে গত রোববার সিএনএনকে অ্যামি ক্লোবুচার বলেন, ‘এই কোম্পানিগুলোর ওপর আমার আর বিশ্বাস নেই। এখন বাচ্চাদের এসব প্ল্যাটফর্মে আসক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেরও উচিত শিশুদের গোপনীয়তা আইন সংশোধন করা এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে তাদের অ্যালগরিদমকে আরও স্বচ্ছভাবে তৈরি করতে তাগিদ দেওয়া।
তবে ফেসবুক আপাতত ‘ইনস্টাগ্রাম কিডস’ অ্যাপস তৈরি বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছেন নিক ক্লেগ।