ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা সত্ত্বেও ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত সম্পর্কে সতর্ক করে দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷ তবে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার সিদ্ধান্ত সঠিক বলে তিনি মনে করেন৷
ইউক্রেনের বিভিন্ন প্রান্তে রাশিয়ার লাগাতার হামলায় হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক মহলে আরো পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে৷ বাইরে থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পেয়েও ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার আগ্রাসন শেষ পর্যন্ত প্রতিহত করতে পারবে কিনা, সে বিষয়েও সংশয় বাড়ছে৷ এমন পরিস্থিতিতে ন্যাটোর সরাসরি হস্তক্ষেপ করা উচিত কিনা, সে বিষয়ে বিতর্ক চলছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমন সংঘাতের ঘোরতর বিরোধিতা করেছেন৷
জার্মানির এক টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শলৎস ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তীব্র নিন্দা করেন৷ এমন ঘটনার জের ধরে জার্মানী যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র না পাঠানোর নীতি বর্জন করে সঠিক কাজ করেছে বলে তিনি মনে করেন ৷ তার মতে, নিরীহ মানুষকে এমন পরিস্থিতিতে অসহায় রাখা যায় না৷
তবে ইউক্রেনের দুর্দিনে সহায়তার একটা সীমা রয়েছে বলে মনে করেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ সামরিক জোট ন্যাটোর কোনো দেশ সরাসরি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে অংশ নিলে নাটকীয় মাত্রায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে বলে শলৎস সতর্ক করে দেন৷ তিনি এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সতর্কবাণীরও উল্লেখ করেন৷
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বার বার রাশিয়ার দোরগোড়ায় ন্যাটোর কার্যকলাপ নিয়ে যে অভিযোগ করে এসেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ওলাফ শলৎস মনে করিয়ে দেন যে ২০০৮ সালেই ইউক্রেন ও জর্জিয়া ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য যে আবেদন জানিয়েছিল তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে তিনি মনে করেন৷ ফলে সেই অজুহাতে ইউক্রেনের উপর হামলার পক্ষে রাশিয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না৷
চলমান পরিস্থিতিতে দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি যে আবেদন করেছেন, সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস৷ তার মতে, বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলির আবেদন আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে৷ তিনি ইইউ-তে যোগদানের শর্তাবলীর কথা মনে করিয়ে দেন৷
রাশিয়ার উপর পশ্চিমা জগতের কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সে দেশ থেকে গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম আমদানির ক্ষেত্রে এখনো কোনো বাধানিষেধ আরোপ করা হয়নি বলে সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ শলৎস এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করে মনে করিয়ে দেন, যে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার আগেই জ্বালানির দাম অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল৷ জার্মানির মানুষকে তাই আপাতত কিছুটা রেহাই দেওয়া জরুরি বলে তিনি মনে করেন৷ তবে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস আমদানির উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চালাতে হবে৷