যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে নানা রকম হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী বলেন, ‘ এক্ষেত্রে আমার ছোটখাটো বক্তব্য হচ্ছে এই, আমি যে ঘটনাগুলো শুনছি, সে ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে দোষটা বোধহয় আইনের থেকে বহুগুণে বেশি আইন প্রয়োগকারী এবং বিচার ব্যবস্থার মধ্যে। কারণ আমি এখানে যা দেখলাম, শুনলাম তাতে এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভুক্তভোগী ও প্রকৃত অপরাধী’ আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, আইনটি তৈরির আগে আইন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেওয়া হয়েছিলো। সেখানে সাংবাদিকদের একটু ক্ষোভ ছিল।
মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এই আইনে পরিবর্তন আনা হবে ইঙ্গিত দিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আইন কোনো চিরস্থায়ী দলিল নয়। সংবিধান পর্যন্ত যদি আমরা পরিবর্তন করতে পারি, আইন পরিবর্তন করা কোনো বিষয় না। আইন যদি পরিবর্তন করার দরকার হয়, তাহলে পর্যালোচনা ও অন্যান্য যে বিষয়গুলো করার দরকার আছে, তা করা যেতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় সংঘটিত অপরাধগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবর্তনের চিন্তাভাবনা এসেছিল। এই আইনের কারণে এমন পরিস্থিতি হবে এমনটা আমি ভাবতেও পারিনি!
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীদের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এটা এক ধরনের সংখ্যালঘু নির্যাতন। এই নির্যাতনগুলো যেন না হতে পারে আইনের দোহাই দিয়ে। এটার জন্য একটা রক্ষাকবচ রাখা যায় কি না সেটার জন্য আমাদের ভাবা উচিত ছিল।’
আলোচনা সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন—একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার তাপস পাল, অ্যাডভোকেট নাসির মিয়া, কাজল দেবনাথ, এ্যারোমা দত্ত এবং সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।