বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০১:১৭ পিএম

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক এই কমিশনারকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়ে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন আজই জারি করা হবে বলে জানান তিনি।

সিইসি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দুটো মনোনয়নপত্র পেয়েছি, ‍দুটোই আমরা যাচাই বাছাই করেছি, তার মধ্যে একটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছি। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের সময় সংসদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। একটির বৈধতা পাওয়া গেছে।

সিইসি বলেন, সেহেতু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

এর আগে গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম দাখিল করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল।

তফসিল অনুযায়ী রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল। 

আগামী ২৩ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। তাঁর উত্তরসূরী হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে ভোট দেন। আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হতে হয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। আর সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। যেহেতু অন্য কোনো দল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করার বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই। এবারও আওয়ামী লীগ যাকে মনোনীত করবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

এর আগে গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনীত করার একক ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া হয়।

পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। তিনি ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালেজাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারাবরণ করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। ওই সময় হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনাও ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওইসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করে, যার প্রধান ছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের সবশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্রসন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব।

Link copied!